এমভি আবদুল্লাহতে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে জলদস্যুরা

সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিজস্ব নৌবাহিনী ও ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ। অন্যদিকে জলদস্যুরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। সেই সঙ্গে জিম্মি জাহাজে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে তারা। এছাড়াও ইইউ জাহাজের উপস্থিতি নাবিকদের ওপর জলদস্যুদের চাপ বাড়াচ্ছে।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে জিম্মি এক নাবিকের পরিবার এক সদস্য গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জাহাজে সুপেয় পানির সংকট দেখা দেওয়ায় নাবিকদের পানি ব্যবহার নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। জাহাজে সার্বক্ষণিক পাহারায় থাকা ৩০ থেকে ৩৫ জন সশস্ত্র জলদস্যু নাবিকদের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে। বর্তমানে কেবিনে থাকতে দেওয়া হচ্ছেনা নাবিকদের। খাবারের কষ্টের পাশাপাশি সবাইকে একটি টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে।

দ্য ডেইলি সোমালিয়া ও ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে জলদস্যুদের বিমান বিধ্বংসী বন্দুকের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, বিমান বিধ্বংসী অস্ত্রগুলো কাপড় মুড়িয়ে সমুদ্রের দিকে তাক করে রাখা হয়েছে।

ইইউএনএভিএফওআর সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যু দমনে ‘অপারেশন আটলান্টা’ নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে নিজেদের এক্স অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জিম্মি এমভি আবদুল্লাহকে ঘিরে তাদের কার্যক্রমের তিনটি ছবি ও একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ‘অপারেশন আটলান্টা’। তার মধ্যে একটি ছবিতে ইইউ নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজটি থেকে বাংলাদেশের জিম্মি জাহাজটিকে দেখা যাচ্ছে। জাহাজটির দিকে তাকিয়ে আছেন ইইউ নেভাল ফোর্সের দুই সদস্য। যা যুদ্ধজাহাজটি থেকে এমভি আবদুল্লাহ’র খুব কম দূরত্বকেই নির্দেশ করে। অপর দুটি ছবি ও একটি ভিডিওতে যুদ্ধজাহাজ থেকে ইইউ নেভাল ফোর্সের একটি হেলিকপ্টারকে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে উদ্দেশে রওনা হয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

মোগাদিসু থেকে এক হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে ভারত মহাসাগর থেকে ছিনতাই করে বাণিজ্যিক কার্গো জাহাজটিকে প্রথমে নেওয়া হয় সোমালিয়ার গারাকাড এলাকায়। উপকূল থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে নোঙর করা হয় সেটিকে। এরপর আবার অবস্থান বদলে আবদুল্লাহকে নেওয়া হয় গদবজিরান উপকূল এলাকায়। সেখান থেকে সরিয়ে নোঙর করা হয় উপকূলের মাত্র সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরে। তারপর আরও এগিয়ে উপকূলের পৌনে তিন কিলোমিটার দূরত্বে নেওয়া হয়েছে। জাহাজটিতে জিম্মি আছেন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি জাহাজটি গত তিনদিন ধরে সেখানেই নোঙর করা আছে।