কলাপাড়ায় ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে তোলপাড়; টাকা ফেরত চাইছেন পদবঞ্চিতরা

মাদকাসক্ত,নারী কেলেঙ্কারী,একাধিক মামলার আসামী, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী কি নেই পদ প্রাপ্তদের মাঝে। ছাত্রত্ব নেই, বিবাহিত সহ বিএনপি রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এমন পরিবারের সন্তানদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব।

শুধু তাই নয়, মাত্র কিছুদিন আগে মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে মুক্তি পেয়ে ঘরে ফিরেছে এমন ব্যক্তিকেও দেয়া হয়েছে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের গুরু দায়িত্ব। এছাড়া লোকমুখে বখাটে নামে পরিচিতি রয়েছে তিনিও পেয়েছেন ছাত্রলীগের ভাই হিসেবে তকমা।

১০ জুলাই রাতে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগ ঘোষিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন সব ব্যক্তিদের ছাত্রলীগের তালিকায় অন্তভুর্ক্ত করে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ, পৌর ছাত্রলীগ ও কলেজ ছাত্রলীগের আংশিক নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এতে কিছু সময়ের মধ্যেই নিন্দার ঝড় ওঠে স্যোসাল মিডিয়ায়।

ঐতিহ্যবাহী সংগঠনকে নিয়ে তামাশা করা হচ্ছে বলে ফেসবুকে পোষ্ট দেন একাধিক ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তবে কিছু সময় পরেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ঘোষিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি স্থগিত আদেশ দেয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, একই রাতে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক আশিক তালুকদার তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে টাকার বান্ডিলের ছবি পোষ্ট করে লিখেছেন, জেলা ছাত্রলীগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি টাকাগুলো যে নিছেন, দয়া করে ফেরৎ দেন, নাইলে গনভবনে যাবো ,বাকি ডকুমেন্টস নিয়া। আর এই লেখা ও ছবি নিয়ে ঝড় ওঠে নেট দুনিয়ায়।

এছাড়া পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের কাছে টাকা ফেরত চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ড ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে শোনা যায়, সাবেক ছাত্রলীগ সম্পাদক আশিক বলেন, টাকা তো অনেকের কাছ থেকে নিয়েছেন, দয়া করে ভাই আমার টাকাটা এখন ফেরৎ দেন। টাকা ফেরত চাইলে জেলা সভাপতি ধমক দিয়ে ফোন রেখে দিতে বলেন। আশিক তালুকদার জানান, আমার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিকাশ মাধ্যম আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন কমিটির কথা বলে। এমনকি একাধিক পদপ্রত্যাশির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা বানিজ্য করছেন তিনি।

এদিকে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত কমিটি দিয়ে দল থেকে ত্যাগীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়ন কমিটি গঠনেও চলছে লেন দেনের খেলা। আর টাকার বিনিময়ে তৃণমূলে বিএনপির কর্মীদের দেয়া হচ্ছে পদ—পদবী। সাংগঠনিক কোন দক্ষতা নেই এমন অনেক ব্যক্তিকে দলের দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত করে ভাই লীগে পরিণত করে শেষ করে দেয়া হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন।

এবিষয়ে জানতে কথা হলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, ভাই টাকা নিয়ে কমিটমেন্ট করলে তাকে বঞ্চিত করবো কেন। এই কথা এখন পদ বঞ্চিতরা বলছে। মাদকাসক্ত এবং অছাত্রদের পদ দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে জানান, জেলা থেকে তো সবাইকে চিনি না। তবে অনেকই তো সুপারিশ করেছে। এছাড়া তিনি বলেন, সাংগঠনিক ভাবে কমিটি দেয়া হয়েছিল। আবার সাংগঠনিক ভাবেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেই কমিটি স্থগিত করেছে।