কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কারান্তরীণ আরেক আসামির মৃত্যু

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি বেদার মোড়ল (৫৭) মারা গেছেন। বুধবার ভোররাত তিনটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের জেলার মো. মামুনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত বেদার মোড়ল সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের সরসকাটি ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি কলারোয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন।

জেলার মো. মামুনুর রশিদ জানান, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার আসামি হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে বেদার মোড়ল কারাগারে ছিলেন। পরে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁর ১৮ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড হয়। গত এপ্রিলে তাঁর বাঁ পায়ের আঙুলে ক্ষত দেখা দেয়। পরে গ্যাংগ্রিন হলে ২৭ এপ্রিল তাঁকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

কলারোয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনের দুটি পৃথক মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলায় আরও ৪৪ আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ দুই মামলায় বেদার মোড়লের সাত বছর করে সাজা হয়।

তিনি বলেন, গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলায় বেদার মোড়লকে চার বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি ফাইমুল হক বলেন, তিনটি মামলায় ৫০ জন আসামির মধ্যে বেদার মোড়লের আগে বিএনপি নেতা মাগফুর রহমান সাবু ও যুবদল নেতা জাবিদ রায়হান লাকী নামে আরও দু’জন আসামি কারাগারে মারা গেছেন। সাজাপ্রাপ্ত ৪৭ জনের মধ্যে বর্তমানে ৩৬ জন কারাগারে আছেন। বাকি ১১ জন পলাতক।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার এক নারীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম ও তাঁর নেতা-কর্মীরা হামলায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।