খুলনাকে আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করা হয়েছে : রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় নির্বাচন কমিশন খুলনাকে আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করেছে।’

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও ভীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরি না করে খুলনাকে এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করেছে। যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে। খুলনায় যা হচ্ছে তা হলো- একনায়কতন্ত্রী শাসনব্যবস্থার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন।

‘আগামীকালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তারের পাশাপাশি খুলনা সিটিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাণ্ডব চলছে। সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মী ও ভোটারদের জন্য অঘোষিতভাবে চলছে কারফিউ, আর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চলছে ফাঁকা মাঠে উৎসব।’

গতকাল খুলনায় বিএনপির পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় ১০-১২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। শিল্প এলাকায় দা, রামদা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের কোনো ভরসা নেই বলেই আমরা বারবার সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছিলাম। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে গ্রিক মূর্তির মতো নিশ্চল ও নিশ্চুপ থেকেছে- যা দূরভিসন্ধিমূলক। ইসি যেন সেই পল্লীগীতির মতো অবস্থা ‘বন্ধু, দেখিয়াও দেখলা না/বন্ধু, শুনিয়াও শুনলা না’। সবচেয়ে করুণ অবস্থায় আছে খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোটাররা। তারা প্রতিনিয়ত ভীত।

‘সরকারি সিন্ডিকেট দাম বাড়াচ্ছে’

রমজানের আগে নিত্য পণ্যের দামের বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রমজান শুরুর আগেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সবকিছুর দাম এখন আকাশছোঁয়া। কয়েকদিনের মধ্যেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বৃদ্ধি করেছে। সরকারি দলের সিন্ডিকেট জিনিসপত্রের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে। পিঁয়াজ, রসুন, চিনি, কাঁচা মরিচ, বেগুন, আলু, হলুদ, আদা, টমেটো, শসাসহ রমজান মাসে মানুষের অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।

রিজভী আরো বলেন, জিনিসপত্রের মূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রমজানকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত মুনাফার জন্য অসৎ ব্যবসায়ীদেরই কারসাজি। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা এসব ব্যাপারে নির্বিকার। কারণ মানুষের কষ্ট হলেও মুনাফা করছে ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের লোকেরা।

‘কোটা নিয়ে সরকার প্রতারণা করছে’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতারণা করেছেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, সারা দেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের উত্তাল ঢেউ সামলাতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এখনো গেজেট প্রকাশ না করায় আবারও আন্দোলনে নামছে শিক্ষার্থীরা।

যদিও শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার কিন্তু বাতিল নয়। অথচ প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর ঘোষণার দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও গেজেট প্রকাশ করছে না সরকার। আমরা সেদিন বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের প্রতি প্রতারণা ও ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু না।