গাইবান্ধায় ভবন ঘেঁষে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে

গাইবান্ধা শহরে ‘হাই ভোল্টেজ’ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের পাশ ঘেঁষে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও মার্কেটসহ বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। তাই মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে এসব ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তার। সঞ্চালন লাইনে বিদ্যৎস্পৃষ্ট হয়ে ও আগুন লেগে প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। ফলে এ সকল স্থাপনায় বসাবাসকারীরা জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

অনেক বাড়ি ও মার্কেটের পাশ দিয়ে দিয়ে ৩৩ হাজার ও ১১ হাজার ভোল্টেজের সঞ্চালন লাইনের খোলা তার বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে।

সমস্যা সমাধানে পৌর ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের ও কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
আর জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বলছে, স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ লাইনের অন্তত ১০ ফুট ফাঁকা রাখার নিয়ম থাকলেও নির্মাণকারীরা তা মানছেন না।

সম্প্রতি গাইবান্ধা শহরের পুরাতন জেল খানা মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ ব্যারাকের নির্মাণাধীন ভবন ঘেঁষে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট ফয়সাল মামুন (২৮) নিহত হয়।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, বিল্ডিংয়ের গা ঘেঁষে লেগে থাকা ৩৩ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গেলে তার শরীরে আগুন জ্বলে ওঠে। এতে মামুনের বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এলাকার লোকজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে তারের সাথে ঝুলে থাকা মামুনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

শহরের ডিবি রোডের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মাস্টার পাড়া এলাকায় বিদ্যুতের মূল স্টেশন থেকে ৩৩ হাজার কেভির উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক তার বিভিন্ন বাড়ির ছাদের ওপর দিয়ে শহরে প্রবেশ করেছে। এ তার থেকে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

কর্তৃপক্ষ এসব বিদ্যুতের তার না সরালে বড় ধরনের দুর্ঘটনাসহ ব্যাপক প্রানহাণির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা আবদুল লতিফের।

সালিমার সুপার মার্কেটের মাকের্টের ব্যবসায়ী মেজবী হাসান জীম বলেন, ‘এ ভবনের তিন তলার কার্নিশ ঘেষে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। একটু বাতাস হলে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে আগুনের ফুলকি পড়ে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) গাইবান্ধা ডিভিসন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইমদাদুল হক জানান, ‘শহরে প্রায় সময়ই সঞ্চালন লাইনে দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। তাই ঘর নির্মাণ করার সময় জনগনকে সর্তক হতে হবে।’

ঘর বা স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ লাইনের অন্তত দশ ফুট ফাঁকা রাখার নিয়ম থাকলেও নির্মাণকারীরা তা মানছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।