গাইবান্ধায় সুদের টাকা দিতে না পারায় বাসচালকের আত্মহত্যা!

গাইবান্ধায় সুদের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে না পারায় ভিটেমাটি হারিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কোব্বাস আলী নামে এক বাসচালক। সোমবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের রথেরবাজার (জেলাল পাড়া) গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

কোব্বাস আলী জেলাল পাড়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের নৈশ্যকোচের চালক ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, দশানি গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী সোনা মিয়ার কাছে সুদে ৩০ হাজার টাকা নেয় কোব্বাস আলী। সেই টাকা সুদে আসলে দেড় বছরে ১ লাখ ২০ হাজারে দাঁড়ায়। এ নিয়ে শনিবার দাদন ব্যবসায়ী সোনা মিয়া কোব্বাস আলীকে বেধড়ক মারপিট করেন। এমনকি সুদের টাকার জন্য কিছু দিন আগে কোব্বাসের একমাত্র ভিটেমাটি জোর করে স্ট্যাম্পে লিখে নেয় সোনা মিয়া।

কোব্বাসের পরিবার অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সম্প্রতি এ নিয়ে সালিস হয়। সেই সালিসে সুদ বাদ দিয়ে আসল ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সালিস বৈঠকে সোনা মিয়া সব কিছু মেনে নেয়। কিন্তু তারপরও শনিবার সুদের টাকার জন্য কোব্বাসকে চাপ দেয় সোনা মিয়া। এ দিন টাকা না দেওয়ায় কোব্বাসকে মারপিট করেন সোনা মিয়া।

খোলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সৈয়দ মোস্তফা জামান মিন্টু বলেন, দশানির সোনা মিয়ার কাছ থেকে কোব্বাস ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিল। সেই টাকা চক্রবৃদ্ধি হারে ১৮ মাসে হয় ১ লাখ ২০ হাজার। এটার জন্য কোব্বাসের বাড়িভিটে স্ট্যাম্প করে নেয় সোনা মিয়া। তাকে মারধরও করে।

তিনি আরও বলেন, এই সুদের টাকা ও বাড়িভিটে জোর করে লিখে নেওয়ায় কোব্বাস আত্মহত্যা করেছে। এটার সঠিক তদন্ত করে বিচার হওয়া দরকার।

গাইবান্ধা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাপ্পি কুমার বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে সুদের টাকা দিতে না পারায় এক জুতা ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর এক মাস বাড়িতে আটকে রাখে এক আওয়ামীলীগ নেতা। পরে ১০ মার্চ সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের (খানকাহ শরীফ) দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।