গাইবান্ধা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হ্যান্ডমাইক হাতে নিয়ে নিজের প্রচারণায় নিজেই আজিজার রহমান

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসন সাদুল্লাপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পলাশবাড়ী উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গাইবান্ধা-৩ নির্বাচনী আসনে ১১জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজার রহমান। আজিজার রহমান বিএসসি নামেই এলাকায় বেশি পরিচিত। এ প্রার্থী বাইসাইকেল নিয়ে নিজেই দিন-রাত মাইকে নিজের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন।

হাঁটছেন দুই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লা, প্রত্যন্ত পল্লী এবং জনসমাগম স্থানসহ চায়ের দোকানে। কখনো হেঁটে-হেঁটে। আবার কখনো বাইসাইকেলে চেপে। তিনি পলাশবাড়ী পৌরশহরের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দু’পার্শ্বে মাইকে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা হয় আজিজার রহমানের সঙ্গে। নিজ কাঁধে হ্যান্ডমাইকে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।

সহকারি শিক্ষক আজিজার বিএসসি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকার হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিজের ‘ঢেঁকি’ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন তিনি। সেই সাথে ভোটার-সমর্থকদের হাতে ধরিয়ে দেন লিফলেট। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরদিন থেকেই তিনি গণসংযোগ চালাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি দু’বার ইউপি, একবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেন। এছাড়াও এ আসনে সংসদীয় উপ-নির্বাচনে তিনি অংশ নিয়ে নৌকার কাছে হেরে যান। এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনে অংশ নিলেও নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। প্রায় ১৩ বছর ধরে বাইসাইকেল চালিয়ে অত্রালাকার জনগণের মাঝে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে আসছেন।

রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেওয়া তার হলফনামা থেকে জানা গেছে, তিনি স্নাতক (ডিগ্রি) বিএসসি পাস। বর্তমানে তিনি দড়ি জামালপুর রোকেয়া ছামাদ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের খোদা বকস্ গ্রামের মরহুম রজব উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। তাঁর জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৭ নভেম্বর খোদা বকস্ গ্রামে।

আজিজার আরও বলেন, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবারও দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নিয়েছেন। জানতে চাইলে আজিজার বলেন, দল এবার প্রার্থী হবার বিষয়টি উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তাই আমি আমার জনপ্রিয়তা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। এতদিন যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা নির্বাচনে বেশি টাকা খরচ করে প্রচারণা চালিয়েছেন। এরপর ক্ষমতায় গেলে বিভিন্ন উপায়ে ওই টাকা তারা ওঠান। তাই তিনি নির্বাচনে সামান্য টাকা খরচ করছেন। যদিও সেটি জনগণের দেওয়া। আশা করি, নির্বাচনী সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে মূল্যায়ন করবেন।

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে আজিজার রহমান বিএসসি ছাড়াও আওয়ামী লীগের অ্যাড. উম্মে কুলসুম স্মৃতি (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার মইনুল রাব্বি চৌধুরী রুমান (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান সাহরিয়া খান বিপ্লব (ট্রাক), জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদল জাসদের এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি (মশাল), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির বীর মুক্তিযোদ্ধা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হক (হাতঘড়ি), কৃষক শ্রমিক জনতালীগ মোস্তফা মনিরুজ্জামান (গামছা) ও জাপা’র স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবু জাফর তৈয়ব জাহিদ নিউ (কেতলী), বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) প্রার্থী মঞ্জুরুল হক সাচ্চা (নঙ্গর) এবং ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি (এনপিপি) প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম (আম) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আজিজার রহমানের ছেলে আশিকুর রহমান বলেন, সততা-নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে আমার বাবা। এই জনপ্রিয়তাই বাবাকে সংসদে পৌঁছে দেবে। আমরা প্রথম দিন থেকেই আচরণবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছি।