চলতি বছরই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে বিশ্ব

করোনা মহামারিতে ২০২০ সালের আর্থিক প্রবৃদ্ধি থমকে থাকলেও ২০২১ সালে সারাবিশ্বের প্রবৃদ্ধি হতে সাড়ে ৫ শতাংশের ওপরে। এ পূর্বাভাস দিয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সহযোগী সংস্থা ওইসিডির। কোভিড নাইনটিনের ভ্যাকসিন বের হওয়া এবং বিভিন্ন দেশ সফলভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রণোদনা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বিশ্ব অর্থনীতিতে। প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ওইসিডি বলছে, করোনা প্রতিষেধক বের হওয়া এবং সফল টিকাদান কর্মসূচির কারণে ডিসেম্বরের চেয়ে দেড় শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে সংস্থাটি।

২০২০ সালের শুরু থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধস নামার পর গত কয়েক মাস ধরে কিছুটা স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে কয়েকটি অঞ্চল। করোনার প্রকোপ না কমলেও টিকাদান শুরু হওয়ায় গতি ফিরেছে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে। বিভিন্ন দেশই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ঘোষণা করেছে প্রণোদনা। ওইসিডি বলছে, চলতি বছর ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ফিরবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রবৃদ্ধি হতে পারে সাড়ে ৬ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে, ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে মহামারি পূর্ববতী অবস্থায় পৌঁছাতে পারে বিশ্ব অর্থনীতি।

এদিকে চীন, ভারত আর তুরস্কের অর্থনীতি আবার মহামারির আগে যে অবস্থায় ছিল, ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে এর চেয়েও ভালো অবস্থায় থাকবে। চীনের অর্থনীতির ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৫ শতাংশ। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশই করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে চীনের অর্থনীতি।

তবে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও কয়েকটি দেশ কিন্তু ২০২২ সাল পর্যন্ত মহামারির আগের অবস্থায় পৌঁছাতে পারবে না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সংগঠন ওইসিডি বলছে, ভ্যাকসিন দ্রুত সব দেশে পৌঁছে দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করলেই অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করবে। ইউরোজোনের বিভিন্ন দেশে এখনো ধীরগতিতে চলছে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন বলছে, পুরো ইউরোপে ভ্যাকসিন সরবরাহ আর ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি নানা কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে সক্ষম ভূমিকা রাখতে না পারলে পুরো ইউরোপের ১০ হাজার কোটি ইউরোর ক্ষতি হতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরবরাহ ব্যাহত, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর জনমনে ভীতির কারণে এ অঞ্চলে টিকাদান কর্মসূচিতে ধীরগতি আছে। একক মুদ্রা ব্যবহারকারী এ অঞ্চলে প্রতি ১০০ জনের জন্য ভ্যাকসিন আছে মাত্র ৮টি। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে পুরোদমে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে না পারলে এ অঞ্চলের ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি ইউরো লোকসান হবে।

ইউরোপিয়ান কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ দেশের এ জোট বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভ্যাকসিন পেতে পারে ১০ কোটি ডোজ।