ছয় জেলায় বজ্রপাতে স্বামী-স্ত্রীসহ ১১ জনের মৃত্যু

দেশের ছয় জেলায় জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। শুক্রাবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতক্ষীরা, নড়াইল, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, মাগুরা ও গাইবান্ধায় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, দুই উপজেলায় পৃথক তিনটি বজ্রপাতের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জের উপজেলার দুই গ্রাম ও আশাশুনি উপজেলার মাদ্রা গ্রামে এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার গড়ইমহল গ্রামের আদম গাজীর বড় ছেলে আলামিন হোসেন, ছোট ছেলে রবিউল ইসলাম, আলামিনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন। তারা বজ্রপাতের সময় ঘরের বারান্দায় বসে ছিলেন। এ ছাড়া, ক্ষেতে কাজ করা সময় একই উপজেলার বিজয়নগর গ্রামের হাকিম গাজীর ছেলে মুনছুর গাজী ও আশাশুনি উপজেলার মাদ্রা গ্রামের কবির সরদারের ছেলে জুয়েল সরদার বাড়ির উঠানে বজ্রপাতে নিহত হন।

কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান ও আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম পাঁচজনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ভক্তডাঙ্গা বিলে মাছের ঘেরে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরো ছয় জেলায় কৃষক আহত হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ১১টার দিকে ভক্তডাঙ্গা বিলে প্রদীপ বর্মনের মাছের ঘেরে কাজ করছিলেন তার ভাতিজা ছোটকালিয়ার প্রহ্লাদ বর্মনের ছেলে নয়ন বর্মন (২৩) এবং সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ফারুক সরদার (৪০)। এ সময় বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। আহত হন ছয় জেলায়জন।

ঘটনার সত্যতা সত্যতা নিশ্চিত করে কালিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বজ্রপাতে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের মধ্য ঝালপাজা চৌরা পাড়া গ্রামে রমিজা খাতুন (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের সামজত আলীর স্ত্রী। ঘরের বারান্দায় বসে থাকা অবস্থায় হঠাৎ তার ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ভালুকা মডেল থানার ওসি মাঈন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাদের ট্যাংকি পরিষ্কার করতে গিয়ে বজ্রপাতে রকি মিয়া (১৫) নামে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত রকি মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার গচিয়াহাটা এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে। রকি মিয়া উপজেলা বিশ্বরোড এলাকার বাদশা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকছিল।

স্থানীয় জানান, উপজেলার শাহ চন্দ্রপুরী হোটেলে ওয়েটার রকি দুপুরে কয়েকজনের সঙ্গে হোটেলের ছাদের ট্যাংকি পরিষ্কার করছিল। এ সময় রকির ওপর বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই রকির মৃত্যু হয়।

মাগুরায় বজ্রপাতে পংকজ কুমার বিশ্বাস নামে এক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে। সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামে গতকাল দুপুরে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

প্রতিবেশী অমারেশ বিশ্বাস জানান, দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে পংকজ বিশ্বাস মাঠ থেকে গরু আনতে যান। এ সময় বজ্রাপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পংকজ কুমার বিশ্বাস সদরের কুচিয়ামোড়া গ্রামের মৃত নারদ বিশ্বাসের ছেলে।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বজ্রপাতে রজ্জব আলী নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকালে সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের সাতআনা বালুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রজ্জব আলী ওই গ্রামের আজগর আলীর ছেলে।

স্থানীয় জানায়, বিকালে বৃষ্টিতে পলুপাড়া চড় থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন রজ্জব আলী। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।