জনমানুষের অবস্থানের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

আত্মপ্রত্যয়, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান বজায় রেখে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে সচিবদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে সচিব সভার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে এ কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সচিব সভা হয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে নতুন সরকারের প্রত্যাশা ও নির্দেশনার কথা শুনতে চান সচিবরা। এ সময় বিভিন্ন বিষয়ে সচিবদের নির্দেশনাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কর আদায়ের প্রতি সচিবদের মনোযোগী হতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাদের আয়কর দেওয়ার কথা, অথচ করের আওতায় আসেনি, তাদের করের আওতায় নিয়ে আসতে জোরালো নির্দেশনা দিয়েছেন।

এ ছাড়া, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অহেতুক কারো যেন হয়রানি হতে না হয়, সেই নির্দেশনাও দেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, কোনো কারণে যদি কোনো বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে সেটা তিনি ভালোভাবে নেবেন না।

সভায় পাট, চামড়া ও কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে মাহবুব হোসেন বলেন, তৈরি পোশাক খাতের মতো চামড়া, কৃষিজাত ও পাটজাত পণ্যে একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে বলেছেন। সেচ মৌসুমে সরবরাহে যেন কোনো বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটা দেখতে বলেছেন।

তিনি বলেন, সভায় সব সচিব উপস্থিত ছিলেন। সচিব পদমর্যাদায় অন্য যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে সচিব সভা হয়েছে, সেটা নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রত্যাশার কথা ও তার নির্দেশনা শুনতে চেয়েছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সুস্পষ্টভাবে বলেছেন— আত্মপ্রত্যয়, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান বজায় রেখে নিজ নিজ দায়িত্ব চালিয়ে যেতে।

আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ১৫ থেকে ১৬ জন সচিব। কয়েকজন নির্দিষ্ট কিছু বিষয় উপস্থাপনও করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রমজানের প্রস্তুতি, খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন ও সার ব্যবস্থাপনা, কর্মমুখী শিক্ষা, নতুন পাঠ্যক্রম ও কর্মমুখী শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন— সংসদ কার্যক্রমে সচিবরা যেন যথাযথভাবে সহায়তা করেন। বিশেষ করে প্রশ্নোত্তর পর্বে সহায়তা করতে বলেছেন। সংসদীয় কার্যাবলীতে কর্মকর্তাদের অবহিত হতে বলেছেন। তাদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের কথাও বলেছেন। মূলত ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া, আগামী পাঁচ বছরে সরকার পরিচালনার মূলনীতি হচ্ছে ইশতেহার। কাজেই ইশতেহার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও যোগ করেন সচিব।

একই সঙ্গে নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, তার মূল লক্ষ্য হলো— জনমানুষের অবস্থানের উন্নয়ন। কাজেই প্রকল্প থেকে জনমানুষের উন্নয়ন হয়েছে কি না, সেটা তিনি জানতে চাইবেন। কাজেই নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি দেখতে বলেছেন।