জাতিসংঘের সব দাপ্তরিক ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ‘৭ মার্চের ভাষণ একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী তথ্যচিত্র’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন যে গ্রন্থ প্রকাশ করেছে, শুক্রবার (৫ মার্চ ) জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষায় তার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে এই অনুষ্ঠান হয় বলে বাংলাদেশ মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, রুশ ও চীনা ভাষাভাষী ১২ জন রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে স্থায়ী প্রতিনিধি ‘The Historic 7th March Speech of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman: A World Documentary Heritage’ গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এ ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ জাতিসংঘের সকল দাপ্তরিক ভাষায় অনুদিত হলো। ইউনেস্কো সদর দপ্তরে কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় শুধুমাত্র আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং দূতাবাসের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

প্রকাশিত এ গ্রন্থে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বিশেষ বাণী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ: একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী তথ্যচিত্র’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন ইউনেস্কোতে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আইভোরি কোস্ট, সেনেগাল, স্পেন, কিউবা, সৌদি আরব, মৌরিতানিয়া, কুয়েত, রাশিয়া, চীন ও বাংলাদেশের এর রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিগণ। পাশাপাশি তারা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন।

ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ তার স্বাগত বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ছিল মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা। এ ভাষণ দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে মূল অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।’ তিনি যৌথভাবে এ গ্রন্থ উন্মোচনে অংশগ্রহণকারী সকল দেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ অনুবাদ এবং প্রকাশনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিগণ তাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সফল নেতৃত্ব প্রদানে এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং এ গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার জন্য ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ প্রকাশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিস ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত তিন দিন ব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার এটি প্রথম দিন ছিল। আগামী ৭ মার্চ দূতাবাসে এবং ৯ মার্চ ইউনেস্কোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দুইটি ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হবে।