টিকিট মিলবে কাল, স্টেশনে অপেক্ষা আজ থেকেই

তখন কেবল সোমবার সন্ধ্যা পেরিয়েছে। স্থানটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনের ফাঁকা জায়গা। স্বাভাবিকভাবে স্থানটিতে এসময় মানুষের উপস্থিতি তেমন একটি থাকার কথা নয়। অথচ দেখা গেল ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি। সেখানে পত্রিকা বিছিয়ে বসে কেউ খোশ গল্প করছেন, কেউবা মোবাইলে অলস সময় কাটাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবে এসময় শুধু চলতি ট্রেনের যাত্রীদের উপস্থিতি থাকার কথা। কিন্তু এখানে বসে যারা অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা আসলে কারা? এমন প্রশ্ন আসতেই পারে?

অনেকটা আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তারা আসলে এসেছেন ঈদের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে। সেই টিকিট আগামী ১৪ জুনের টিকিট, যেটা দেওয়া শুরু হবে আগামী কাল (৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে। কিন্তু আগে না আসলে সিরিয়ালে অনুযায়ী টিকিট পাবেন না এমন আশঙ্কা থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা আগেই টিকিট কাউন্টারের সামনে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তারা।

এমন টিকিট প্রত্যাশী, অপেক্ষমাণদের মধ্যে একজন রিয়াজুল ইসলাম। বেসকারি চাকরিজীবী তিনি, আগামী ১৪ জুন পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উৎযাপনে রাজশাহী যাবেন। আলাপকালে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমার অন্য সহকর্মীরা আজকের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পায়নি। তাই আগামীকালের টিকিটের জন্য প্রায় ১২ ঘণ্টা আগেই সিরিয়ালে দাঁড়িয়েছি। এছাড়া আগামীকাল অফিস আছে, যে কারণে টিকিট সংগ্রহ শেষে এখান থেকেই অফিস যাবো।

আরেক টিকিট প্রত্যাশী হিমেল রহমান রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট সংগ্রহে এসেছেন। তিনি বলেন, যেহেতু স্ত্রী সন্তানদের সঙ্গে করে ঈদ করতে যাবো গ্রামে, তাই এসি টিকিট পাওয়াটা জরুরি। যে কারণে আজ রাত থেকেই টিকিটের লাইনে অপেক্ষায় আছি। রাতের খাবার এবং সেহেরি বক্সে করে এনেছি, এখানেই তা খেয়ে টিকিটের জন্য অপেক্ষায় থাকবো।

টিকিট কাউন্টার সূত্রে জানা গেছে, আগামী কাল সকাল ৮টা থেকে মোট ২৬টি কাউন্টারে আগামী ১৪ জুনের টিকিট দেওয়া হবে। এরমধ্যে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কাউন্টার আছে দুইটি। এছাড়া আগামী ৬ জুন দেয়া হবে ১৫ জুনের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। ঈদ উপলক্ষে বিক্রিত টিকিট কোনো অবস্থাতেই ফেরতযোগ্য নয়।

এদিকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা ট্রেনে কোনো আসন বিহীন টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে না অন্যান্য ট্রেনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র যাত্রীদের অনুরোধে যাত্রার দিন আসনবিহীন টিকিট ইস্যু করা হবে।

এছাড়া ট্রেনর অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে না আইন-শৃংখলা বাহিনীসহ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ।