দখল হওয়া ৫২ বিঘা আয়তনের চ্যানেল ফিরে পেল তুরাগ

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো দখলমুক্ত হলো প্রায় বাহান্ন বিঘা আয়তনের পুরো একটি নদীর চ্যানেল। যা কিছুদিনের মধ্যেই নৌযান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। রাজধানীর আলোচিত আমিন মোমিন হাউজিংয়ের দখল করা তুরাগ নদের হারিয়ে যাওয়া চ্যানেল এটি। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, চ্যানেলটি উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে নদীখেকোদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো রাষ্ট্র। আর নৌ মন্ত্রণালয়ের দাবি, দেশের সব নদী দখলকারীদের জন্য একই পরিণতি অপেক্ষা করছে। খবর সময় টিভি’র।

প্রবহমান তুরাগ নদ। আকাশ থেকে দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। ছোট্ট একটি দ্বীপ আর তার দুই পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দুটি চ্যানেল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য তুরাগের বসিলা পাড়ের এই চ্যানেলটির জায়গায় চার মাস আগেও ছিল অবৈধ দখলদার আমিন মোমিন হাউজিংয়ের বিশাল আবাসন প্রকল্প।

ঢাকার চারপাশের নদী দখলমুক্ত করার অভিযানের অংশ হিসেবে এ বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়েছিল তুরাগের পুরো একটি চ্যানেল দখল করা আমিন মোমিন হাউজিংয়ে উচ্ছেদ অভিযান। মে মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের গাফিলতির কারণে তা শেষ হতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

লম্বায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার, চওড়ায় প্রায় সাড়ে তিনশ ও প্রায় ৪০ ফুট গভীর করে খনন করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে হারিয়ে যাওয়া চ্যানেলটি। পুরো কাজটির নেতৃত্ব দেয়া বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা এ. কে. এম. আরিফ উদ্দিন বলছেন, এটি ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, মূল চ্যানেলটা বন্ধ থাকার কারণে বড় দুটি লঞ্চ পাশাপাশি একসাথে যাতায়াত করতে পারতো না। বিআইডব্লিউটিএ একটা ইতিহাস রচনা করলো। বাকি যে হাউজিং কোম্পানিগুলো ভরাট করেছে সকলকেই একই ভাগ্য গ্রহণ করতে হবে।

কোনো দখলদার রাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী নয় বলে মন্তব্য করে নৌ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ মাসের মধ্যেই চ্যানেলটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ বলেন, ওয়াকয়ে হবে সীমানা পিলার, রেলিং হবে এবং ইকোপার্ক করা হবে। সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। যাতে তারা নদী পথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ শাহমুদ চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীক স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার আমরা নিচ্ছি। সংসদে আম দাড়িয়ে বলেছি কোনো ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী কখনো সরকার ও রাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে না।