দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কঙ্কাল চুরির সময় পাঁচ যুবক গ্রেফতার, আলামত জব্দ

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কবরস্থান থেকে মৃত ব্যক্তির কঙ্কাল চুরির সময় পাঁচ যুবক গ্রেফতার করেছে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ। রবিবার (২৭ আগষ্ট) দিবাগত রাতে তাদেরকে বীরগঞ্জ চৌধুরীহাট বালাপুকুর করবস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির সময় গ্রেফতার করা হয়।

এই ঘটনায় বীরগঞ্জ থানায় দুপুর ২টার সময় প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলে শেরপুর জেলার নকলা থানার নারায়নখোলা বাজার আদর্শ গ্রাম টাংইগালাইলা পাড়ার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ লালচাঁন (৩০) বাবর হোসেনের ছেলে আব্দুস সোবাহান সফু (২৮) মৃতঃ সাবেদ আলীর ছেলে মোঃ ফরিদ হোসেন শেখ ফরিদ (২৪) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার আলিনগর গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে মোঃ সেরাজুর ইসলাম ওরফে সিরাজুল ইসলাম (২৭) ও সদর উপজেলার অষ্টধর গ্রামের তামিজ উদ্দিন অরফে আজিজুল ইসলামের ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন বাবু (২৫)।

প্রেস ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) খোদাদাদ সুমন জানান, গত কয়েক দিন ধরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ ও প গড় জেলায় একের পর এক গোরস্থানের কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হয়ে যাচ্ছিল। এ নিয়ে এলাকার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাগুলো অবগত হওয়ার পর কঙ্কাল চোরদের গ্রেফতারের জন্য কাজ শুরু করে। এলাকার প্রতিটি কবরস্থানে নজরদারি বাড়ানো হয়। জন প্রতিনিধি এবং পুলিশ এক হয়ে কঙ্কাল চোরদের সনাক্ত করার জন্য মাঠে কাজ শুরু করেন।

রবিবার দিবাগত রাতে বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বালাপুকুর করবস্থানে এলাকাবাসী ৫জন যুবককে করবস্থানে প্রবেশ করতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। রাত সাড়ে ১১ টার সময় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে কঙ্কাল চুরির সময় উপরোক্ত পাঁচ যুবককে গ্রেফতার করে। প্রেস ব্রিফিং এ তিনি আরও জানান, পাঁচ জন আসামীর মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজন আসামী স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। আসামীদেরকে বিকালে দিনাজপুর আদালতে সোর্পাদ করা হয়েছে।

ব্রিফিং এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল) খোদাদাদ সুমন জানান কঙ্কালগুলো তারা চুরি করে ঢাকা ও রংপুরে বিশেষ ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। তবে এই কঙ্কালগুলো ঠিক কি কাজে ব্যবহার করা হয় পুলিশ এখন তা নিশ্চিত হতে পারে নাই। এ ঘটনায় আরও কয়েক জন আসামী পলাতক রয়েছে।

গ্রেফতার কৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে আরও নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন কঙ্কাল চুরির সাথে জড়িতরা জানান তারা সাধারণত রাস্তার ধারের কবরস্থানগুলোর পুরাতন কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করে।

একেকটি কঙ্গাল তারা সাত থেকে দশ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ঘটনাস্থল থেকে নতুন ট্রাউজার, টি শার্ট, গামছা, মোবাইল, সিম কাড, সাদা পলেথিন জব্দ করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, ১০নং মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শাহিনুর রহমান চৌধুরী শাহীন, তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মইনুল ইসলাম প্রমুখ।প্রসঙ্গতঃ বীরগঞ্জ উপজেলার তুলসিপুর, চৌধুরীহাট বালাপুকুর, লাটেরহাট, ঘোড়াঘাটের কেন্দ্রীয় কবরস্থান এবং ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন কবরস্থান থেকে কবর খুড়ে লাশ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছি এই চক্রটি।
এ নিয়ে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।