দৌলতদিয়া ঘাটে গাড়ির দীর্ঘ লাইনে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে

ফেরীঘাটে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে ঢাকামুখী মানুষেরা। গরমে অসহনীয় পরিস্থিতিতে যাত্রীরা। দৌলদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে আছেন হাজার হাজার মানুষ। যাত্রী নিয়ে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে শত শত বাস।

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ লাইনে তথা যানজটে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।

ঘাট থেকে আট কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যানবাহনের সারি তৈরি হওয়ায় শুক্রবার (৬ মে) রাতে আসা গাড়িগুলো ফেরির দেখা পায়নি শনিবার দুপুর পর্যন্তও। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা থেকে সকাল ১১টা ৩১ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৯ঘন্টাও ফেরীর দেখা মিলেনি।

দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অব্যবস্থাপনা, চাঁদাবাজি আর অনিয়মের কারণে এই পরিস্থিতি। ভিআইপি অগ্রাধিকার দিয়ে আগে পার এবং ভিআইপির নামে টাকা নিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেয়াও সংকটের অন্যতম কারণ। এছাড়াও প্রতিটি ফেরীতে দুই থেকে তিনটি গাড়ি তোলার পর প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল এবং সাধারণ মানুষদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে ফেরী। গাড়ির চেয়ে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলে আয় বেশি ফেরী কর্তৃপক্ষের।

এদিকে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা ও দক্ষিণবঙ্গের সব গাড়ির যাত্রী শুক্রবার রাতের পর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে আছেন। সামান্য কিছু গাড়ি পার হতে পারলেও বাকি গাড়িগুলো জ্যামে আটকে আছে।

সাতক্ষীরা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় যে গাড়ি ছেড়েছিল সেই গাড়ি শনিবার (৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। সাত ঘণ্টার রাস্তা আসতে লেগেছে ১৬ ঘণ্টা বলে জানিয়েছেন এসপি গোল্ডেনের টিকিট মাস্টার মেহেদী জামাল।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাত থেকে গাবতলী বাস টার্মিনাল একেবারে ফাঁকা। প্রতিদিন সকাল থেকে ৭/৮টা গাড়ি দুপুরের আগে ছেড়ে থাকি। আজ মাত্র দুটি গাড়ি ছাড়তে পেরেছি।

খুলনা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী মহসিন বলেন, আমি শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে খুলনা থেকে রওনা দিয়ে এখন ঢাকায় আসলাম। কারণ নদীর ওপারে প্রচণ্ড জ্যাম।
তিনি আরও বলেন, যেমন গরম তেমনি জ্যামের কারণে যাত্রীদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। আর যাদের সঙ্গে ছোট বাচ্চা আছে তাদের না দেখলে বোঝা যাবে না।

অন্যদিকে যারা ঈদের ছুটিতে বিশেষ কারণে বাড়ি যেতে পারেননি তারা ঈদের পরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শুক্রবার থেকে যেতে পারছেন না। গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকিট থাকা সত্ত্বেও ওপারের গাড়ি নদী পার হয়ে আসতে না পারার কারণে অনেকেরই বাড়ি যাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।