নওগাঁয় মেয়ের দাবি ধর্ষণ, ছেলের অস্বীকার, চেয়ারম্যান জোর করে মেয়ে কে রেখে গেলেন ছেলের বাড়ি

আজ থেকে ছয় মাস পূর্বে জনি কুমার নামের এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছিল ফুলকীর (ছদ্ম নাম)। বিয়ের চার মাস পর জানতে পারে ফুলকী তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বা। বিষয়টি বাবা-মাকে জানালে গর্ভপাত ঘটান। জানতে পারে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। ভেঙে যায় বিয়ে। হতাশায় পড়ে যায় মেয়ে ও মেয়ের পরিবার।

ঘটনাটি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার প্রত্যন্ত গামে। মেয়ের অভিযোগ বিয়ের একমাস আগে মৃত্যুঞ্জয় নামের এক ছেলে বাড়িতে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করে। আর ছেলের পরিবারটি বিষয়টি মানতে নারাজ। এদিকে রেজাউল করিম পল্টন নামের এক চেয়ারম্যান ছেলের পরিবার থেকে টাকা না পেয়ে মেয়ের পরিবার থেকে টাকা নিয়ে এই ঘটনার বিচার করে দিয়েছেন বলে জানা যায়।

অভিযোগ আধাইপুর ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম পল্টন টাকার বিনিময়ে একক ক্ষমতাবলে ইউনিয়ন পরিষদে বিচার করেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলনা ছেলে। কিন্তু ছেলের বাবা ও ভাইকে ডেকে এনে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ে ফুলকীকে তাদের জিম্মায় দিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক ও হিন্দু শাস্ত্রমতে হয়নি কোনো বিয়ে। তারপরও তিনি এমন কান্ডজ্ঞানহীন ঘটনা ঘটিয়েছেন শুধুমাত্র একক ক্ষমতাবলে। এমনটিই অভিযোগ ছেলের পরিবার ও একাধিক স্থানীয়দের।

ধর্ষণ ও অনশন এর বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলকি বলেন, আমার সাথে মৃত্যুঞ্জয় এর কোনো দিন প্রেমের সম্পর্ক ছিলো না। তবে আমার বিয়ের কয়েক মাস আগে বাড়ীতে একা ছিলাম তখন মৃত্যুঞ্জয় আমাদের বাড়ীতে আসে এবং জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণ করেন। তিনি আরও বলেন, আমাকে ধর্ষণের একমাস পরে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।

বিয়ের তিনমাস পরে আমি জানতে পারি আমার গর্ভে চার মাসের বাচ্চা। পরে আমি শশুর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে বেড়াতে আসি এবং পরিবারের নির্দেশে গর্ভপাত ঘটাই। ঘটনাটি আমার শশুড় বাড়ীর লোকজন জানতে পারেন। পরে আমাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

এ বিষয়ে মৃত্যুঞ্জয় এর পরিবারের কাছে জানতে চাইলে বড় ভাই সুব্রত বলেন, আমার ভাই নিরাপরাধ। ঐ মেয়ের সাথে আমার ভাইয়ের কোন সম্পর্ক ছিলো না। চেয়ারম্যান এবং গ্রামবাসি জোর করে মারধরের হুমকি দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ফুলকিকে আমাদের বাড়িতে রেখে গেছে। মেয়ের কিছু হলে সব দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে,বলে গেছে।

আপনার ভাইয়ের সাথে ফুলকির কি বিয়ে হয়েছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন না। তাহলে ঐ মেয়েকে আশ্রয় দিলেন কেন, জবাবে তিনি বলেন চেয়ারম্যান মারধর করবে। নিরুপায় হয়ে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম (পল্টন) এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সাক্ষাতে কথা বলবো, বলে ফোন কেটে দেয়।

বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমান বলেন, এই ধরণের কোন অভিযোগ করা হয়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইন গতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।