নতুন করে হজে যেতে পারছেন না কাতারের কেউ

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হল হ্জ। সামর্থ্য থাকলে জীবনে অন্তত একবার হজ পালন করা ফরজ। অথচ কাতারের সামর্থ্যবান মুসলমানদের অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এ বছর হজে যেতে পারছেন না।

পবিত্র নগরী মক্কা-মদিনা কর্তৃপক্ষ কাতারের এই হজযাত্রীদের ইচ্ছা পূরণে বাগড়া দিয়েছে। অথচ বিশ্বের সামর্থ্যবান সকল মুসলমান জীবনে অন্তত একবার হজ পালনের ইচ্ছা পোষণ করেন।

কাতারের বহু হজযাত্রী হয়তো অাগামী বছর বেঁচে নাও থাকতে পারেন। ফুরিয়ে যেতে পারে বহু মানুষের আয়ু। সেক্ষেত্রে তাদের অার হজ পালন করা হচ্ছে না।

সামর্থ্যবান মুসলমানদের বিষয়টা বেশ ভোগাবে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সারাবিশ্বের মুসলমানদের মতো কাতারের হজযাত্রীদেরও তারা পবিত্র হজ পালনের সুযোগ করে দিয়েছে।

অবশ্য অবরোধের মধ্যেও সীমান্ত খুলে দিয়ে কাতারের হজযাত্রীদের প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে সৌদি। এছাড়া কাতারের হজযাত্রীদের জন্য আলাদাভাবে তথ্যকেন্দ্র স্থাপনেরও সুযোগ দেয়া হয়েছে।

তবে প্রথম দিকে কাতারের হজযাত্রীরা সৌদিতে প্রবেশ করতে পারলেও এখন সেই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।

কাতারের নাগরিক এবং অভিবাসীদের বাৎসরিক হজ পালনের যাবতীয় প্রক্রিয়া তদারককারী প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে, তাদের পক্ষ থেকে সৌদির সঙ্গে হজযাত্রীদের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলেও কোনো রকম সাড়া মেলেনি।

কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক সা’দ সুলতান আল-আবদুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক বিরোধের সঙ্গে কোনো মুসলমানকে সেখানকার ব্যাপারে (হজের) গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। ধর্ম পালনের অধিকার প্রত্যেক মুসলমানের রয়েছে। রাজনীতি এবং মানবাধিকার সম্পূর্ণ আলাদা।

পরিস্থিতি ঠিকভাবে সামলাতে না পারার জন্য সৌদি সরকারের সমালোচনা করেছেন মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় সম্মান এবং স্বাধীনতার জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠানের প্রধান আবদেল মাজিদ মারি।

তিনি ফ্রান্স থেকে আল জাজিরাকে ফোনে জানান, মক্কা কোনো সরকারের সম্পত্তি নয়; মক্কা সকল মুসলমানের।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ জুন সৌদি আরবের নেতৃত্বে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে মিসর, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর কাতারের জন্য আকাশপথ, স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দরও বন্ধ করে দেয় সৌদি জোট।

ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, মুসলিম ব্রাদারহুড, আইএস, আল-কায়েদাসহ জঙ্গি সংগঠনগুলোকে সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগে কাতারকে কার্যত একঘরে করে রাখে সৌদি জোট। তবে বরাবরই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে কাতার।

সূত্র : আল জাজিরা