পাকশী বিভাগীয় রেলওয়েতে ৫ মাসে পণ্যবাহী ট্রেন থেকে রাজস্ব আয় ৫৯ কোটি টাকা

পাবনার ঈশ্বরদী পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় ভারত থেকে তিন ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশ (জানুয়ারি-মে) পর্যন্ত গত ৫ মাসে ৫৬৯টি পণ্য পরিবহণ ট্রেন দেশে এসেছে।

শুধু পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়েতে পণ্যবাহী ট্রেনেই ৫ মাসে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৩৫৩ টাকা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশীর বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা (ডিটিও) মো. আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী সহকারী বিভাগীয় পরিবহণের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মহামারী করোনার সময়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় পণ্যবাহী ট্রেন চালু ছিল। চলতি বছরের ৫ মাসে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রেন সময়ক্ষেপণ কিংবা ক্রসিং (মালবাহী ট্রেনটি থামিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন পারাপার) করানোর পর আয় কিন্তু কমেনি। তবে চাহিদা মোতাবেক যদি েেলাকোমোটিভ ইঞ্জিন, পর্যাপ্ত ট্রেনের পরিচালক থাকতো, তাহলে আরও বেশি আয় করা সম্ভব হতো বলে মনে করে পরিবহণ দপ্তর।

চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত গত পাঁচ মাসে ভারত থেকে ৫৬৯টি টেকওভার ট্রেন আসা-যাওয়া করেছে। এতে ভারত থেকে পণ্যসহ দেশে এসেছে ২৩ হাজার ৫৭৫টি ওয়াগন বগি। যার মধ্যে চাল, গম, ভুট্টা, পাথর, ফ্রাইআশ, খৈল, পেঁয়াজ, বক্সেন পাথরসহ নানা পণ্যজাত ভারত হস্তান্তর করেছে। এতে পাকশী রেলওয়ে বিভাগ চলতি বছর ৫ মাসে রাজস্ব আয় করেছে ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৩৫৩ টাকা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, আগে বৃটিশ আমলের তৈরি লোকোমোটিভ ইঞ্জিন দিয়ে মালবাহী ট্রেন চলাচল করতো। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে এখন নতুন ৬৬ সিরিজের আধুনিক লোকোমোটিভ ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেনগুলো চালানো হয়। আগের যে ৬৫ কিংবা ৬৪ সিরিজের ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ ইঞ্জিন দিয়ে পণ্যবাহী পরিবহনগুলো চলাচল করানো হয়। কিন্তু পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে বেশ জনবল ঘাটতি থাকার কারণে পর্যাপ্ত রেলওয়ে ইঞ্জিন এবং পর্যাপ্ত ট্রেন পরিচালক না থাকায় কিছুটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

ডিটিও আনোয়ার হোসেন জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীর চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট শহিদুল ইসলাম স্যারের সার্বিক নির্দেশনায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি চলতি বছরে ৫ মাসে ৫৬৯টি পণ্য পরিবহণ ট্রেন দেশে এসেছে। এতে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়েতে পণ্যবাহী ট্রেন থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৩৫৩ টাকা। করোনাকালীন সময় শুধু পণ্যবাহী ট্রেনে ৫ মাসে আয় হয়েছিল ৬০ কোটি ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৩৫৩ টাকা।
কম খরচে, স্বল্প সময়ে দেশে খাদ্য চাহিদা পূরণ, উন্নয়নমূলক কাজের পণ্য সহজে আমদানি করা সহজ হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রেন আসছে, পরবর্তীকালে আবার খালি রেক ভারতে ফেরত যাচ্ছে। এতে করে আন্তদেশীয় রাজস্ব বৃদ্ধি হচ্ছে, পাশাপাশি দুই দেশে সু-সম্পর্কের ‘প্লাটফর্ম’ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন বলে মনে করেন ওই রেলওয়ে কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জুন মাসে এক মাসেই ১২৬টি পণ্যবাহী ওয়াগন ভারত থেকে আসায় পণ্য পরিবহণের ১১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার ৭৫২ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল। যা স্বাধীনতার পর কোনো সরকারের আমলে এমন রাজস্ব আয় হয়নি।