পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর প্রকল্প থেকে ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের ক্যাবল চুরি

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি লেইভার ক্রেন থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরির খবর পাওয়া গেছে। ক্রেনগুলো পদ্মার পাশে পানিপথে মালামাল ওঠা-নামার জন্যে ব্যবহার করা হয়। প্রকল্পের কাজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ১২৬ চাকাবিশিষ্ট ক্রেন থেকে চুরি যাওয়া ক্যাবেলের মূল্য ৬৫ লাখ টাকা।

চুরির কয়েক দিন পর বুধবার রাত ১১টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী থানায় রূপপুর প্রকল্প থেকে এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ‘আছের’ ডাইরেক্টর অফ সিকিউরিটি ভিএন তুরুটিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, রূপপুর প্রকল্পের অভ্যন্তরে জাহাজের মালামাল ওঠা-নামার নির্ধারিত স্থানে থাকা ওই দুটি লেইভার ক্রেন গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণের সময়ে ক্যাবলগুলো রাখা ছিল। কিন্তু গত ৯ জানুয়ারি পুনরায় জাহাজে ওই দুটি লেইভার ক্রেনের যান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় ২৬৫ মিটার গুরুত্বপূর্ণ ক্যাবল পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে রূপপুর প্রকল্পের জন্য নির্মিত জেটিতে মালামাল ওঠা-নামা অনিয়মিত রয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্রেন দুটি থেকে ক্যাবলগুলো চুরি হয়েছে। কিন্তু এত বিপুল অঙ্কের টাকার মালামাল খোয়া গেলেও এ বিষয়ে প্রকল্পের অনেকেই মুখ খুলতে চান না।

এ ব্যাপারে জানতে রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবরকে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

তবে রূপপুর প্রকল্পের সাইট ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম বলেন, চুরির বিষয়টি মোটেও ঠিক হয়নি। এখানে প্রত্যেকটি সাব কন্ট্রাক্টরের নিজস্ব সিকিউরিটি আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সংস্থার নিরাপত্তা রয়েছে। মূল ঠিকাদার রোসাটমেরও কিছু দায়িত্ব আছে।

সাইট ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘গত সপ্তাহে রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবর রূপপুর প্রকল্পে এসে সেনাবাহিনীসহ অনেকের সঙ্গে মিটিংও করেছেন। এ সময় সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার তাগিদ দেওয়া হয়। আমরাও বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, বুধবার রাত ১১টার পরে রূপপুর প্রকল্প থেকে ‘আছের’ ডিরেক্টর অফ সিকিউরিটি মামলার জন্য এজাহার জমা দেন। রাতেই মামলাটি গ্রহণ করা হয়।

চুরি প্রসঙ্গে ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ওই ক্রেনের ক্যাবল চুরির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের হয়ত নিয়মিত ওখানে যাতায়াত আছে বা মেশিন সম্পর্কে ধারণা আছে। তা না হলে এত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হলো কীভাবে?
তিনি আরও জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য পাকশী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আতিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।