প্রেমিকার অন্তরঙ্গ ছবি স্বামীকে পাঠিয়ে গ্রেপ্তার হলেন সাতক্ষীরার এক ডাক্তার

সাতক্ষীরায় প্রেমিকা অনৈতিক সম্পর্ক গড়তে রাজী না হওয়ায় বিবাহের পূর্বের অন্তরঙ্গ ছবি ফেইসবুকে ও স্বামীর মোবাইলে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ইকবাল মাহমুদ পিয়ালকে পর্ণোগ্রাফি আইনে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকালে তাকে সাতক্ষীরা শহরের শহিদ আলাউদ্দিন চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ইকবাল মাহমুদ সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম সালাহউদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
মঙ্গলবার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জিয়ারুল ইসলাম তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, যশোর জেলার কোতোয়ালি থানাধীন চাঁচড়া ডাল মিল এলাকার ও বর্তমানে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরের বাসিন্দা এক দন্ত চিকিৎসক নারীর সঙ্গে সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়ার (আমতলা) কামালউদ্দিনের ছেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ইকবাল মাহমুদ পিয়ালের সঙ্গে কয়েক বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে ডা. ইকবাল মাহমুদ পিয়াল ওই নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ধারণ করে রাখে। ওই নারী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ইকবাল মাহমুদকে বিয়ে করতে বলায় তিনি রাজী হননি। একপর্যায়ে ওই নারীকে পরিবারের পক্ষ থেকে নারায়ানগঞ্জ জেলা সদরের অধ্যক্ষ খগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রোডের বাসিন্দা এক চিকিৎসকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে ইকবাল মাহমুদ এক ডাক্তারকে বিয়ে করেন যিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।

মামলার বিবরণে আরো জানা যায়, পেশাগত কারণে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরে অবস্থান করার কারণে ডা. ইকবাল মাহমুদ পূর্বের প্রেমিকা দন্ত চিকিৎসককে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য চাপ সৃষ্টি করতেন। প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় বিয়ের পূর্বেকার তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া ও তার স্বামীর কাছে দেওয়ার হুমকি দেন ডা. ইকবাল মাহমুদ। এরই ধারাবাহিকতকায় ডা. ইকবাল মাহমুদ তার নিজ মোবাইল ফোন থেকে ওই দন্ত চিকিৎসক নারীর সঙ্গে বিয়ের পূর্বের তার অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তার স্বামীর হোয়াটএ্যাপ এ পাঠিয়ে দেন।

বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে রবিবার ওই নারী বাদি হয়ে ডা. ইকবাল মাহমুদের নাম উল্লেখ করে ২০১২ সালের পর্ণোগ্রাফি আইনের ৮(১),৮(২) ও ৮(৩) ধারায় সদর থানায় একটি মামলা (জিআর-৪৭৩/২২) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক পিন্টু লাল দাস সোমবার সকালে দিকে শহরের শহীদ আলাউদ্দিন চত্বর থেকে ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে বিকেলে তাকে আদালতে পাঠান।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক পিন্টুলাল দাস জানান, গ্রেপ্তারকৃত ডা. ইকবাল মাহমুদ সোমবার আদালতে বিচারিক হাকিম সালাউদ্দিনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. মাহমুদ হোসেন জানান, মঙ্গলবার ডা. ইকবাল মাহমুদের পক্ষে তার আইনজীবী আলমগীর হোসেন বাপ্পি জামিন আবেদন করলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জিয়ারুল ইসলাম তার জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করেন।