বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি : আ স ম ফিরোজের বিরুদ্ধে মামলা, সাক্ষী নানক

জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপির বিরুদ্ধে পটুয়াখালীর আদালতে একটি নালিশি মামলা করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যার ষড়যন্ত্র, বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতা-জাটা ও লাঠি নিয়ে আনন্দ মিছিল, বরিশাল আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, বঙ্গবন্ধুর ছবি রাস্তায় এনে মাটিতে ফেলে পদদলিত করা ও রাষ্ট্রদোহীমূলক অপরাধের অভিযোগ এনে পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ২য় আমলী আদালতে এ নালিশি মামলাটি দায়ের করা হয়।

বাউফল উপজেলার বাউফল সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. জাহিদুল হক (৪৬) বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. জামাল হোসেন মামলাটি গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত কোন আদেশ দেয়নি। আগামী ১৯ ডিসেম্বর বিজ্ঞ আদালত আদেশ দিবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ মামলায় প্রথম ঘটনা দেখানো হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ৮টায় বরিশাল বিবির পুকুরের পশ্চিম পাড়, ঘটনার দ্বিতীয় তারিখ দেখানো হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টায় বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হলের উত্তর পাশে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। তৃতীয় ঘটনা দেখানো হয় একই দিন বেলা সোয়া ১২টায় এবং সর্বশেষ ঘটনা দেখানো হয় চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১২টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, সর্বশেষ ঘটনার চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১২টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতাঝাটা লাগিয়ে আনন্দ মিছিল করেছি। তাতেই কিছু হয়নি,আর বাউফল আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা যারা আমার বিরুদ্ধ করে তাদের ডজন-খানেক খুন করলেও অমার (আ.স.ম ফিরোজ এমপি) কোন ক্ষতি হবেনা’।

ওই দিন বাদী সেখানে উপস্থিত থেকে এই কথা শুনে শিউরে ওঠেন এবং পরবর্তীতে তিনি ৭৫ সালের সেই ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এর পর গত ১২ ডিসেম্বর বাউফল থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ৭৫’র বরিশাল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আলতাফ হোসেন ভুলু, বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিমউদ্দিন ফরাজীসহ ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

এদিকে বাদী পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপি বলেন, ‘আমি এ বিষয় কোনো বক্তব্য দিবো না। ৪০ বছর ধরে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আছি। আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করা করাচ্ছেন। কে কে এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তা নেত্রী সবই জানেন। একটি মহল নতুন রাজনীতি এসে আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছে এবং খুন-খারাবিসহ এলাকার শান্ত রাজনৈতিক পরিবেশকে অশান্ত করে তুলছেন। এসব করে কোন লাভ নেই’।