বাজারে নেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি স্যানিটাইজার

করোনাকালে দেশি-বিদেশি স্যানিটাইজারের রমরমা ব্যবসা হলেও বাজারে নেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কেরু’র স্যানিটাইজার। লাভজনক হওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে গত এক বছরে পাইকারি-খুচরা কোনো পর্যায়েই গড়ে ওঠেনি তাদের বিপণন ব্যবস্থা। উৎপাদনেও চরম উদাসীনতা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কেরুর স্যানিটাইজার উৎপাদন বাড়ানো উচিত।

গতবছর করোনা মহামারির শুরুতে বাজারে চাহিদার সঙ্গে কয়েক গুণ বাড়ে জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম। সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীরা তৎপর হয় ভেজাল স্যানিটাইজার তৈরিতেও। এমন পরিস্থিতিতে নিজস্ব কাঁচামাল স্পিরিট ও অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করে স্যানিটাইজার উৎপাদন শুরু করে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। কিন্তু একবছরেও রাজধানীর কোনো ওষুধের দোকানে পৌঁছায়নি রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানের তৈরি স্যানিটাইজার।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে স্যানিটাইজারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সরবরাহ না থাকায় হাতের নাগলে যা পাচ্ছেন তাই কিনছেন বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাজধানীর মতিঝিলের এক পুরনো ভবনে পাওয়া গেল কেরুর স্যানিটাইজারের বিক্রয়কেন্দ্র ও গুদাম। যদিও ক্রেতাদের কাছে সহজলভ্য করার যে কোনো উদ্যোগই নেই, তা স্পষ্ট হলো কর্মকর্তাদের কথায়।

কেরু অ্যান্ড কো.-এর ঢাকা সেলস সেন্টারের ডিজিএম (সেলস) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় আমাদের অফিস ও চিনি ভবন থেকে বিক্রি হয়। যারা হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিতে চান তাদেরকে দিয়ে দেই। এখানে কাস্টমার আসলে বিক্রি করি।

কেরু অ্যান্ড কো.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সায়ীদ বলেন, আমরা প্রতিদিন উৎপাদন করি না। মনে করেন, দু’দিন করলাম আবার ৩ দিন বন্ধ রাখলাম এ রকম। আমাদের সব উপকরণ রেডি থাকে। আমরা বেশি মজুত করতে চাচ্ছি না। বেসরকারি ও সরকারি ডিস্ট্রিবিশন চ্যানেলের মধ্যে পার্থক্য আছে নিশ্চয় আপনি জানেন।

করোনাকালে স্যানিটাইজারের বাজার সম্প্রসারণে কেরুর এ উদাসীনতায় অবাক অর্থনীতিবিদরাও। যদিও খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শোনালেন আশার কথা।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, গত এক বছরে এই স্যানিটাইজার উৎপাদনের যে সুযোগ ও সম্ভাবনা নষ্ট করেছেন এখন তাদেরকে সেটি পুষিয়ে নিতে হবে। এ কারণে তাদের উৎপাদন ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করতে হবে, যেহেতু এটি একটি নিশ্চিত বাজার। এখানে বাংলাদেশের অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এবং অনেকে আমদানি করে স্যানিটাইজারের চাহিদা মোকাবিলা করছে।

চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু বলেন, এটার (বোতলের) মুখটা খুলে ব্যবহার করতে হয়। এটা আসলে অতটা ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়তো না। পারফিউম করে এবং স্প্রেসহ একটু দাম বাড়িয়ে বিক্রি করার চিন্তাভাবনা করছি।

কেরুর গুদামে ও কারখানায় বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার লিটার স্যানিটাইজার মজুত আছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সৌজন্যে : সময় সংবাদ