বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রটোকল ছাড়াই বেয়াই বাড়ি বেড়িয়ে এলেন

সরকারি প্রটোকল বা কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছাড়াই চুপিসারে পরিবার নিয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বেয়াই বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

রোববার (৩১ জানুয়ারি ) দুপুরে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পাকুরিতা গ্রামের আগষ্টিন মুকুল ঢালীর বাড়িতে আসেন তিনি। এসময় তার স্ত্রী মালবিকা মুনশী, বড় মেয়ে তানিয়া অনন্যা মুনশী ও বড় মেয়ে জামাতা, মন্ত্রীর শ্যালিকা বিপাশা, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী সামিরা রহমান তার সঙ্গে ছিলেন।

আগষ্টিন মুকুল ঢালী জানান, তার ছেলে ডিল রিয়াল ঢালী অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। সেখানে লেখাপাড়ার সময়ে রিয়াল ঢালীর সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির মেঝ মেয়ে তৃষা মুনশীর পরিচয় হয়। রিয়াল ঢালী ও তৃষা মুনশী অষ্ট্রেলিয়ায় একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছেন। তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর তিনেক আগে তারা বিয়ে করেন। সেই সম্পর্কের সূত্রে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি তার (আগষ্টিন মুকুল ঢালী) বেয়াই হন।

বিয়ের পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে আগৈলঝাড়ায় বেড়াতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তার বেয়াই মুকুল ঢালী। তবে ব্যস্ততার কারণে তিনি যেতে পারেননি। কয়েকদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তার বেয়াইকে মুঠোফোনে জানান, আগৈলঝাড়ায় বেড়াতে যাবেন। রোববার দুপুরে টিপু মুনশি তার পরিবার নিয়ে বেড়াতে সেখানে বেড়াতে যান। দুপুরের খাবার খান। এরপর কিছু সময় কাটিয়ে তিনি ফিরে আসেন।

মুকুল ঢালী বলেন, আমার বেয়াই বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বেড়াতে এসেছিলেন। এটা সরকারি কোনো সফর নয়। তিনি প্রশাসন বা দলীয় নেতাদের অযথা বিরক্ত করতেও চাননি। এজন্য কাউকে কিছু না জানাতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন।

এদিকে মন্ত্রীর বেড়াতে যাওয়ার খবর জানাজানি হলে গ্রামের লোকজন আগষ্টিন মুকুল ঢালীর বাড়িতে ভিড় করেন। খবর পেয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবুল হাশেম মন্ডল ও থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার।

এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার পাশ্ববর্তী গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের রাধাগঞ্জ গ্রামে তার পৈতৃক বাড়ি। তবে তিনি বরিশালে লেখাপড়া করেছেন। তাই বরিশালের সঙ্গে তার অনেক স্মৃতি। আর এখন তো বরিশালের মানুষের সঙ্গে তার আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি হয়েছে। সেই আত্মীয়ের বাড়িতেই তিনি বেড়াতে এসেছিলেন। পরে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন তিনি।

আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বলেন, লোকমুখে খবর পেয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে গিয়ে তিনি দেখা করেছি। মন্ত্রীকে আগৈলঝাড়া থাকার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিলাম। তবে জরুরি কাজ থাকায় তাকে আজ ঢাকায় ফিরতেই হবে বলে জানান তিনি।

আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত জানান, একজন মন্ত্রী আসার আগে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়। নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। নানা আয়োজন করা হয়। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির আগৈলঝাড়া সফর ছিল ব্যতিক্রম। সরকারি প্রটোকল বা কোনোরকম নিরাপত্তা ছাড়াই অনেকটা গোপনে কাউকে কিছু না জানিয়ে মন্ত্রী এসেছিলেন। সত্যি বিষয়টি ছিল অবাক করার মতো।