বিএনপিহীন নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে নৌকার প্রার্থীরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে খুলনার কোনো আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাড় পাচ্ছেন না আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। বরং দশম নির্বাচনে যে আসনগুলোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবার সেখানে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি।

জানা যায়, দশম সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৪ (দিঘলিয়া-রূপসা- তেরখাদা) আসনে এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা, খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া) আসনে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনে নুরুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তবে এবার খুলনা-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুস সালাম মুর্শেদীসহ ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। খুলনা-৫ আসনে বর্তমান সংসদ-সদস্য ও নৌকার প্রতীকের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দসহ ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া খুলনা-৫ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন।

এই তিনটি আসনে নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে আওয়ামী লীগ নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে এই তিনটি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। দশম সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাসের কাছে পরাজিত আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থী ননী গোপাল মন্ডল এবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

তিনি আসনটি থেকে ইতঃপূর্বে দুবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। যার ফলে তার জন্য এবারের নির্বাচনটি বেশ সহজ। আসনটিতে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ৪ জন। খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। আসনটিতে ভোট পড়েছিল ২৬ দশমিক ৬৪ ভাগ। এবার আসনটিতে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। আসনটিতে তার ঘনিষ্ঠ মানুষরাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করছেন।

এখানে মোট প্রার্থী ৬ জন। খুলনা-৩ (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহানআলী) আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ-সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র মো. মনিরুজ্জামান খান খোকন এবং অপর আওয়ামী লীগ নেত্রী সাহিদা বেগম। নির্বাচনে আসনটিতে ভোট পড়েছিল ২৯ দশমিক ৬৩ ভাগ। এবার আসনটিতে থেকে প্রথমবারের মতো নির্বাচন করছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী এসএম কামাল হোসেন। খুলনা-১, খুলনা-২ এবং খুলনা-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার তুলনায় ভোটার উপস্থিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অনেকে।

এ বিষয়ে খুলনা-৬ আসনের নৌকার প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, কয়রা ও পাইকগাছার অনেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এখনো নৌকার পক্ষে কাজ শুরু করেননি। এ আসন থেকে যারা মনোনয়ন পায়নি তাদের সমর্থকরা এখনো মাঠে নেই। খুলনা-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী এসএম কামাল হোসেন যুগান্তরকে জানান, উপস্থিতি বৃদ্ধি করার জন্য সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রচার করছি। ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। আশা করি ৭ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ হবে।