মুক্তি পেলেন পুলিশের ভুলে সাজাপ্রাপ্ত নিরপরাধ রেখা

বিনা দোষে কারাভোগ করা টাঙ্গাইলের জাহালমের পর এবার মুক্তি পেলেন যশোরের রেখা খাতুন। সতিন শিরিন বেগমের পরিবর্তে ১৬ দিন জেল খাটেন তিনি।

বৃহস্পতিবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক নাজির আহমেদ এ আদেশ দেন। পরে সন্ধ্যায় তাকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

রেখা খাতুন ঝিনাইদহ শহরের শহীদ মশিউর রহমান সড়কের বাসিন্দা লাল্টু শেখের মেয়ে ও যশোর শহরের ডালমিল এলাকার ভাড়াটিয়া। রেখা শহিদুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী।

২০ মার্চ কোতোয়ালি থানা পুলিশ শহরের রায়পাড়া এলাকা থেকে রেখা খাতুনকে শিরিন বেগম হিসেবে গ্রেফতার করে। ওই দিন আদালত তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়।

২০০৫ সালের একটি মাদক মামলায় ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট (হেরোইন উদ্ধার) যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া ইসমাইল কলোনি এলাকার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী শিরিন বেগমকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। একই সঙ্গে দশ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো চার মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এই মামলায় শিরিন বেগমের স্বামী শহিদুল ইসলাম খালাস পায়। শিরিন বেগম পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

২০ মার্চ শহিদুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী রেখা খাতুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার রেখা খাতুন শিরিন বেগম নয় দাবি করে ২৪ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী আব্দুস সহিদ। বিচারক শুনানি শেষে বিষয়টি এসপিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দেয়। এসপির পক্ষে তদন্ত করেছেন এএসপি গোলাম রব্বানী।

রেখা খাতুনের আইনজীবী আবদুস সহিদ বলেন, বৃহস্পতিবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক নাজির আহমেদ পুলিশের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে রেখা খাতুনকে মুক্তির আদেশ দেন।

এএসপি গোলাম রব্বানী বলেন, রেখা খাতুনকে ভুল করে শিরিন বেগম হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। রেখা এবং শিরিন আলাদা ব্যক্তি। শিরিন বিদেশে রয়েছে। রেখা শহিদুলের দ্বিতীয় স্ত্রী। এলাকাবাসী পুলিশকে জানিয়েছিল, সেই (রেখা) শিরিন। পুলিশের অনিচ্ছাকৃত ভুল এটি। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব বলেন, আদালতের নির্দেশে সন্ধ্যায় শিরিন বেগমকে (রেখা খাতুন) মুক্তি দেয়া হয়েছে। একজনের পরিবের্ত আরেকজন ছিল কি না, সেটা বলতে পারব না। যেভাবে যাকে পাঠানো হয়েছে তাকেই আদালতের আদেশে মুক্তি দেয়া হয়েছে।