ভোট বর্জনের নতুন কর্মসূচি বিএনপির

আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এই আহ্বানের পক্ষে আগামী সপ্তাহ থেকে টানা এক সপ্তাহের হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলগুলো। এবারের কর্মসূচিতে হরতাল-অবরোধের পাশাপাশি ভিন্ন নামে একই ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।

সম্প্রতি বিএনপির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ১ থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোট বর্জনের কর্মসূচিতে হরতাল-অবরোধই থাকছে।এরপর নির্বাচন বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি শুরু হবে। পুরো জানুয়ারি মাসের প্রতি সপ্তাহে কয়েক দিন বিরতি দিয়ে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি চলতে পারে।

বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, সপ্তাহ খানেকের প্যাকেজ কর্মসূচির বিষয়ে দলে আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচনের আগের কয়েক দিন টানা হরতাল পালন করা হবে।

হরতাল যাতে কঠোরভাবে পালন করা হয় সে জন্য ‘গণকারফিউ হরতাল’, ‘লকডাউন হরতাল’ কিংবা অন্য কোনো নামকরণ করা হতে পারে।

আগামী সোমবার ১ জানুয়ারি খ্রিস্টীয় নতুন বছরের প্রথম দিন। ওই দিন থেকেই টানা ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত জনগণকে ভোটদানে বিরত রাখতে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের নীতিনির্ধারকরা। এর আগে চলতি সপ্তাহের শেষ তিন দিন গণসংযোগের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

এরপর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। চলমান আন্দোলনে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। রবিবার বছরের শেষ দিন। থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসবকে কেন্দ্র করে এদিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারা দেশে বেশ কড়াকড়ি থাকে। এ জন্য এদিনে বড় কর্মসূচি না-ও থাকতে পারে।

বিএনপির কর্মকৌশল প্রণয়নে যুক্ত থাকা একজন নেতা জানান, ভোটের আগে ও পরের কর্মসূচির বিষয়ে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ও আন্দোলনের মাঠে সমমনা জামায়াতে ইসলামীসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। সব দলের মতামত নিয়ে শুক্র ও শনিবার বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বসে কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন কর্মসূচি প্রণয়নের আগে ঢাকা মহানগর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। কয়েক দিন আগে মহানগর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে নেতারা ভোট বর্জনের কর্মসূচিতে বিরতি না দেওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁদের আরো পরামর্শ ছিল, টানা ওই আট দিনের কর্মসূচি একসঙ্গে ঘোষণা করা হলে নেতাকর্মী ও জনগণ তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে আগেই ধারণা পাবে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র কঠোরভাবে ভিসনীতির প্রয়োগ ও ধাপে ধাপে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। এ জন্য নির্বাচনের পর কর্মসূচি চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নেতারা বলেন, নিষেধাজ্ঞা এলে হরতাল-অবরোধ কঠোরভাবে পালন করে সরকারকে চেপে ধরার চেষ্টা করা হবে, যাতে দাবি আদায় করা সম্ভব হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ভোট বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি চলছে। এরপর ভোটের দিনটি সামনে রেখে কর্মসূচি দেওয়া হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলতে থাকবে।