ভোলায় জাল মেরামতে অবসর সময় পার করছেন জেলেরা

ভোলায় একদিকে লকডাউন অন্যদিকে মার্চ ও এপ্রিল এই দুই মাস ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জাল মেরামতে অবসর সময় পার করছেন চরফ্যাসন উপজেলার জেলেরা। জেলেপল্লীগুলোতে এখন যেন জাল মেরামতের ধুম পড়েছে। ঘাট-সংলগ্ন সুবিধাজনক জায়গায় দলবেঁধে পুরাতন জাল মেরামতের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

এই উপজেলার বিভিন্ন ঘাটের দুই পাশে শত-শত ট্রলার নোঙ্গর করে রেখেছেন। উপকূলজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মাছঘাট এবং ফাঁকা যায়গায় জেলেদের এভাবে জাল মেরামতের কাজ করতে দেখা গেছে।

চরফ্যাশনের আহাম্মদপুর ইউনিয়ন সুকনাখালী ঘাটের জেলে জসিম মাঝি জানান, জেলেদের জন্য সরকারের দেওয়া কোনা সুবিধাই মেলেনি। তার অভিযোগ গত বছর স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আঃ মান্নান তার কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়েছে তবুও তার জেলে কার্ডটি হয়নি। তাই সাগরে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জাল বুনে কিছু টাকা আয় করে সংসার চালাচ্ছেন।

ওই ঘাটের জেলে রহিম জানান, ইউপি সদস্য মান্নান তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়েছে তবুও তার জেলে কার্ডটি হয়নি। অথচ তাদের সাথে নিবন্ধন করা অন্যান্য জেলেরা জেলে কার্ড পেয়েছে। তারপরও নিষিদ্ধ সময়ে বসে না থেকে পুরাতন জাল বুনে এই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জেলে রহিম জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সাগরে যাওয়া হয়না, তাই জাল মেরামতের মধ্যে দিয়ে অবসর সময় পার করছি। জাল বুনে যে টাকা আসে তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই সমিতি থেকে লোন নিয়ে সংসার চালাচ্ছি।

অধিকাংশ জেলেদের অভিযোগ, সরকারের দেওয়া কোন সুবিধা মেলেনি তাদের। বরাদ্দের সিংহভাগই স্থানীয় ইউপি সদস্য, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা লুটেপুটে খায়। তাই তারা সাগরে ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

চরফ্যাসন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার জানান, চরফ্যাসন উপজেলায় ৪০ হাজার ২৪৬ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। তার মধ্যে এই দুই মাস নিষিদ্ধ সময়ে ৪ কেজি করে ১৯ হাজার ৩৩জন জেলের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

চরফ্যাসনে জেলেদের সংখ্যানুপাতে সীমিত পরিমাণ বরাদ্দের ফলে বঞ্চিত অনেক জেলে। মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে উপজেলার সব জেলেদের একসঙ্গে চালের সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই জেলেরা সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। পর্যায়ক্রমে সকল জেলেকে অবরোধ চালাকালীন সময়ে চালের সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।