মঠবাড়িয়ায় মেম্বারের দাবি চোরাই গরু, গৃহস্থের দাবি কেনা গরু; প্রশাসনে অভিযোগ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৫ নং ওয়ার্ড ফুলঝুড়ি গ্রামের সেলিম বিশ্বাসের গোয়াল ঘর থেকে ৪টি গরু নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দফাদার ও কয়েকজন চৌকিদারের বিরুদ্ধে ।

এ ঘটনায় ওই গরুগুলো উদ্ধারের জন্য ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন সেলিম বিশ্বাসের স্ত্রী জাহানারা বেগম। তবে ধানিসাফা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেনের দাবি গরুগুলো চোরাই। এজন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান চৌকিদার দফাদার পাঠিয়ে গরুগুলো এনে আমার জিম্মায় রেখেছে।

অভিযোগে উল্লেখিত বিবাদীরা হলো-ধানিসাফা এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীর চৌকিদার (সাবেক ইউপি সদস্য), আঃ ছত্তার চৌকিদার,মোঃ শহীদ চৌকিদার,মোঃ মামুন চৌকিদার ও মোঃ খলিল দফাদার।

বাদী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমার পুত্র জাহিদ বিশ্বাস পিকআপ গাড়ির হেলপার হিসেবে কাজ করে।আমার ছেলের উপার্জিত অর্থে এবং মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আমির হোসেন পঞ্চায়েত এর স্ত্রী মোসাঃ বকুল বেগম (আমার পুত্রের নানী শ্বাশুড়ী) এর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করে বিগত ৫/৬/২৩ ইং তারিখ শিয়ালকাঠি পশুর হাট থেকে রুহুল আমিন পিতা-হাসেম সাং-শরণখোলা এর কাছ থেকে ৭২ হাজার টাকার বকনা বাছুর সহ নারা ধলা একটি গাভী ক্রয় করে।এই একই হাট থেকে ২০/০৬/২৩ ইং তারিখ হাসান গাজী পিতা-আরিফ গাজী উপজেলা – শংকর পাশা এর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্যে লাল দোসনা বাছুর এবং ওই একই বাজার থেকে আমান হাং পিতা-আরমান হাং সাং-পাটকেলঘাটা, ভান্ডারিয়া এর কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় নারা ধলা রংয়ের ১টি দোসনা বাছুর ক্রয় করে।এরপর ক্রয়কৃত এ গরুগুলো আমাদের বাড়িতে লালন পালন করি।

অতঃপর আমার পুত্র জাহিদ বিশ্বাস গাড়ি চালায় বিধায় প্রায়ই বাড়ির বাহিরে থাকে। গত ২৪/০৮/২৩ ইং তারিখ ইন্দুরকানী থানাধীন পাড়েরহাট ইউনিয়নের টগড়া সাকিনে টগড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে পাকা রাস্তার উপড় সকাল অনুমান ৮:০৫ ঘটিকায় আমার পুত্র জাহিদ বিশ্বাস পিকআপ গাড়িতে থাকা অবস্থায় দুর্ঘটনার শিকার হয়।পরবর্তীতে ইন্দুরকানী থানা পুলিশ আমার পুত্রের গাড়ি জব্দ করে এবং আমার পুত্রের গাড়ির ড্রাইভার ইউসুফ শরীফ ও আমার পুত্র জাহিদ বিশ্বাসের নামে জিআর ৫১/২৩ ধারা ৯৮/১০৫/৯৯ সড়ক পরিবহন আইনের ২০১৮ মামলা হলে আমার পুত্র জেল হাজতে যায়। উক্ত মামলা হওয়ার পর ইন্দুরকানী থানা পুলিশ মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের নিকট আসামীদের নাম ঠিকানা যাচাই করার জন্য ইনকোয়ারি স্লিপ পাঠায়।এতে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ ধানিসাফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদের নিকট আসামীদের নাম ঠিকানা সঠিক আছে কিনা জানতে চায়।এরপর ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগে উল্লেখিত বিবাদীদের আমাদের বাড়িতে পাঠায়।আমি ও আমার পুত্রবধু তখন পিরোজপুরে ছিলাম।এ সুযোগে বিবাদীরা আমাদের বাড়িতে না পাইয়া আমাদের গোয়াল ঘর থেকে ৪টি গরু নিয়ে যায় এবং গরু ৪টি ১ নং বিবাদীর ফার্মে নিয়ে আত্মগোপন করে রাখে।বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বলেন- গরুগুলো চোরাই গরু।তাই আটকে রাখা হয়েছে। আমি বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি যে,২,৩,৪ ও ৫ নং বিবাদী আমার বাড়ি থেকে গরু নিয়ে ১ নং বিবাদীর ফার্মে রেখেছে। আমরা গরু চাইতে গেলে বিবাদীরা তালবাহানা শুরু করে।বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে তাহারা আমাদের সাথে ১ নং বিবাদীর গরুর ফার্মে যায় এবং গরুর অবস্থান নিশ্চিত হই।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গরুগুলো নেওয়ার পর থানায় কোন জিডি করেনি।এমনকি কোন আইনগত পদক্ষেপও নেয়নি।তারা গরুগুলো আত্মসাৎ করতে চায়।তাই গরুগুলো বিবাদীদের কবল থেকে উদ্ধার করা একান্ত প্রয়োজন।

ধানিসাফা ইউনিয়নের দফাদার খলিলুর রহমান জানান,ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে চৌকিদার নিয়ে ফুলঝুড়ি এলাকার সেলিম বিশ্বাসের গোয়াল ঘর থেকে ৪টি গরু আনা হয়েছে। এগুলো এখন কোন অবস্থায় আছে তা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ুম জানান,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষের কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।