মাদারীপুরের শিবচরে সড়কে ১৯ জন প্রানহানির ঘটনায় বাস কোম্পানীর বিরুদ্ধে মামলা

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে ইমাদ পরিবহনের দুর্ঘটনায় কোম্পানীকে অভিযুক্ত করে শিবচর থানায় মামলা করেছেন হাইওয়ে পুলিশ। এতে ১৯ জন নিহতের ঘটনায় বাস কোম্পানীকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ মার্চ) গভীর রাতে শিবচর হ্ইাওয়ে থানার সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৯৮/৯৯/১০৫/১০৬(১) ধারার অপরাধ উল্ল্যেখ করে মামলাটি রুজু করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোররাতে খুলনা থেকে যাত্রী বোঝাই করে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮) ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসলে পথে বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী উঠান।

পদ্মাসেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সিমানা এলাকায় দিয়ে যাওয়ার সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এসময়ে বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নীচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সাথে ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পর আহত আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জনের মৃত্যু হয়।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত ইমাদ পরিবহনের সেই বাসের রুট পারমিট স্থগিত ছিল। ছিল না কোন ফিটনেস সার্টিফিকেট। ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বালুবোঝাই ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয় ইমাদ পরিবহনের এই বাসটি। এতে তিন যাত্রী নিহতসহ আহত হয়েছিল ৮ জন। এরপর ওই গাড়ির কাগজপত্রের অনুমোদন স্থগিত করে দেওয়া হয়। সবশেষ গত ১৮ জানুয়ারিতে ওই বাসের গাড়ির ফিটনেস সনদের মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়। তবে চলাচল নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে মালিকরা বাসের ফিটনেস নবায়ন করেননি। এছাড়াও কয়েক মাস আগে একই কোম্পানীর অন্য আরেকটি বাস মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে কমপক্ষে তিনজন প্রান হারায়। সেই ঘটনায় রহস্যজনক কারণে শিবচর থানায় মামলা হলেও সে মামলা তুলে নেয় নিহতের পরিবার।

বিআরটিএ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডে তৈরী করে এই বাসটি । ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নিবন্ধন নেওয়া হয় । নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী বাসটি ৪০ আসন থাকার কথা।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির কোন ফিটনেস সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন শিবচর হাইওয়ে থানার ওসি আবু নাঈম মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হক। তিনি জানান, নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বাসটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক ছিলো না বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, বাস কোম্পানীকে অভিযুক্ত করে হাইওয়ে পুলিশ মামলা করেছে। বাসটির চালক, সুপার ভাইজার, সহকারী দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার কারণে মামলা থেকে তাদের রেহাই দেয়া হয়েছে। বাসটি একটি কোম্পানীর অধিনে পরিচালিত হতো তাই নির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে মামলা না করে কোম্পানীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে কার কি দায় সেটা বের করবে। এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।