মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার দাবি বিএনপি’র

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মানবিক দিক বিবেচনায় আবারও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার দাবি জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দেশব্যাপী দোয়া মাহফিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাহফিলে অংশ নেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকমীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র নেতারাও।

এসময় বক্তারা বলেন, অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারের প্রতি মানবিক বিবেচনার আহ্বান জানান তারা।

উন্নতি হয়নি বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা। সিসিইউতে আছেন পর্যবেক্ষণে এ অবস্থায় মানবিক দিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে অনুমতির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।

গত শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিতে হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিউ)। রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, নিয়ন্ত্রণহীন উচ্চ রক্তচাপ আর বেশ কয়েকবার বমি করার কারণেই তৎক্ষণাৎ নেওয়া হয় সেখানে।

জানা গেছে, হিমোগ্লোবিন বাড়াতে বেগম জিয়ার শরীরে দেওয়া হয়েছে দুই ব্যাগ রক্ত। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে তাকে ব্লাড সুগার চার্ট মেনে চলার পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ইনস্যুলিন। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণহীন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে দেওয়া হচ্ছে নানা ওষুধও।

বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলছেন, মেডিকেল বোর্ড তাকে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছেন। তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার বিকল্প নেই বলেও মতামত দিয়েছেন চিকিৎসক দলের সদস্যরা।

দীর্ঘ ২৭দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার মাত্র ৬ দিনের মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৩ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। এরপর রাতে তাকে নেওয়া হয় সিসিইউতে।

প্রসঙ্গত: জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাদণ্ড হয় বিএনপি নেত্রীর। এরপর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। এরপর তিন দফায় মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর।