মোংলায় ঘূর্ণিঝড়ে জাহাজ ডুবিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

মোংলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে পশুর নদীর লাউডোবা এলাকায় সিমেন্টের কাঁচা মালবাহী একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩০০ কাঁচা ঘরবাড়ি ও প্রায় দুই হাজার মাছের ঘের। এর মধ্যে প্রায় ২০০ ঘের সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া গাছপালা উপড়ে এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে অনেক এলাকা।

ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজের মালিক মো. হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, গত রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে পশুর নদীর লাউডোব এলাকায় ৪০০ মেট্রিক টন জিপসাম নিয়ে কার্গো জাহাজটি ডুবে যায়।

এদিকে ঝড়ের রাতে ও পরদিন মঙ্গলবার দুপুরের জোয়ারে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। এতে তলিয়েছে পশুর নদীর পাড়ের জয়মনি, চিলা, কাইনমারী, কানাইনগর, শেলাবুনিয়া ও বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলের পাড়ের বাসিন্দাদের বাড়িঘর।

ঝড়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুইদিনেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন মোংলা বন্দর, পৌর শহরসহ গ্রামাঞ্চলে। এতে চরম ভোগান্তিতে লাখো মানুষ।

বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং শাখার সহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান রকি বলেন, মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক চ্যানেলে বিআইডব্লিটিসির স্টিমার ঘাটের পল্টুন ডুবে গেছে। তবে যে পল্টুনটি ডুবেছে তাতে ওই চ্যানেল দিয়ে অন্য নৌযান চলাচলে আপাতত কোনো সমস্যা হবেনা। পল্টুনটি উদ্ধারে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী যানসহ লোকজন রওনা হয়েছেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) কালাচাঁদ সিংহ বলেন, মালিক পক্ষকে দ্রুত কার্গোটি উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে মোংলা বন্দরে সব বিদেশি জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণ পুরোদমে শুরু হবে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঝড়-বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই হাজার চিংড়ি ঘের মালিক কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর ২০০ ঘের পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিংড়ি ঘেরের বেশি ক্ষতি হয়েছে চিলা ও চাঁদপাই ইউনিয়নে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানা বলেন, ঝড়ে মোংলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩০০ কাঁচা ঘরবাড়ির পুরোপুরি ও আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো যাতে সব ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা পেতে পারেন সেজন্য তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে পাঠানো হচ্ছে। এরপর বরাদ্দ পেলেই ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে তা বণ্টন করা হবে।