যেসব কারণে জলদস্যুদের কবলে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ

ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এখন সোমালীয় উপকূলে জলদস্যুদের জিম্মায়। যেখানে জিম্মি হয়ে সময় কাটছে ২৩ নাবিকের। অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাইরে কেন এই জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়লো, এখন তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কারও কারও মতে, পরিকল্পিতভাবেই ছিনতাই করা হয়েছে জাহাজটিকে।

মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা ধারণামতে, চার কারণে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে।

তাদের মতে, দস্যুতারোধে চিহ্নিত এলাকায় আন্তর্জাতিক বাহিনীর টহল ছিলো না। কম গতিতে চলছিল জাহাজটি, ড্রাফট ছিলো বেশি। ঘাটতি ছিলো কাঠামোগত নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও।

মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুরা নরমালি তা ট্র্যাকিং করে। যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত তারা জাহাজের রুট সম্পর্কে জানে এবং জাহাজকে মনিটর করে সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ করে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী বলেন, সচারাচর কম ড্রাফট আর দ্রুতগতির জাহাজ আক্রমণ করে না দস্যুরা। কিন্তু এমভি আবদুল্লাহ ছিলো বেশি ড্রাফট আর কম গতির জাহাজ। সেই সঙ্গে ছিলো না বাড়তি নিরাপত্তা। ফলে জাহাজটিতে সহজেই উঠে পড়েন জলদস্যুরা।

মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলদস্যুদের ঠেকাতে একসময় আন্তর্জাতিক বাহিনীগুলো বেশ সক্রিয় ছিলো ভারত মহাসাগরে। কিন্তু লোহিত সাগরে হুথি বিদ্রোহীদের তৎপরতার কারণে এখন সবার মনোযোগ সেদিকে। ফলে টহল শিথিল হয়ে পড়ায় ভারত মহাসাগরে আবার বেপরোয়া সোমালীয় দস্যুরা।

গত তিন মাসে ১৪টি জাহাজ ছিনতাই করে জলদস্যুরা, যা ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার বলে মনে করেন নৌ-বাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ।

তবে কেন জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়লো, তার পর্যালোচনার চেয়ে এখন জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করার দিকেই মূল মনোযোগ বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ।