রংপুরের পীরগঞ্জের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই!

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ৪৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। সরকারি ও বেসরকারি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সরকারি অর্থ বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না মর্মে জানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মন্ডল জানান, উপজেলায় ফাজিল, আলিম, দাখিল ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মিলে ১১৫টি মাদ্রাসা রয়েছে। এগুলোর একটিতেও শহীদ মিনার নেই। একটি সরকারি কলেজসহ পাঁচটি ডিগ্রী কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, বিএম এবং দুইটি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে পীরগঞ্জ সরকারি শাহ আব্দুর রউফ কলেজ, পীরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজ, মনিকৃষ্ণসেন ডিগ্রী কলেজ, চতরা ডিগ্রী কলেজ ও খালাশপীর বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে।

এছাড়া উপজেলার ১০১টি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক এবং ১০টি কারিগরি (ভোকেশনাল) মিলে ১১১টি বিদ্যালয় রয়েছে। পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,উপজেলা সদরের কসিমননেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লালদিঘী মেলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ খুবই কম সংখ্যক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার ২৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১৭টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই।

২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, দেশের যেসব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলোতে অতি দ্রæত শহীদ মিনার নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, সেগুলো যথাসম্ভব দ্রæত সংস্কার করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধও করা হয়।

সরেজমিন জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬০শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এর মধ্যে মাদ্রাসা প্রায় শতভাগ, নিম্মমাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় প্রায় ৭০ শতাংশ, কলেজ প্রায় ৫০ শতাংশ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০ শতাংশ শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার নেই এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কলাগাছ বা বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আরিফ-উজ জামান বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাউশি’র নির্দেশনার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহীদ মিনার তৈরীর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির সভাপতিকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায় জানান, আমি শহীদ মিনারের সঠিক হিসাব জানিনা। করোনার কারণে এ বছর শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবে না। আমি শিক্ষা অফিসারদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলব।