রংপুরের পীরগঞ্জে আশ্রয়ন প্রকল্পে পানিবন্দি ৪০ পরিবারের মানবেতর জীবন-যাপন

রংপুরের পীরগঞ্জে আশ্রয়ন প্রকল্পে আশ্রয় নেয়া ৪০টি পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ২০১৯ সালে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে প্রথম পর্বে উপজেলায় মোট ২২৫টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে শানেরহাট ইউনিয়নের দামোদরপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পেয়ে আশ্রয় নেয় ৪০টি গৃহহীন পরিবার।

১৭৫ বর্গফুট আয়তনের একটি মুল টিনের ঘরে ১২টি পিলারসহ বারান্দায় ৫টি এবং ল্যাট্রিনে ৪টি পিলার সম্বলিত ঘর নির্মাণে প্রতিটি ঘরের জন্য ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। প্রকল্প কমিটির সভাপতি ছিলেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টি এম এ মমিন। ঘরে মেঝে ঢালাই ছাড়াই পিলারগুলো স্থাপন করা হয়েছে। ওই আশ্রয়ন প্রকল্পে এখনো অনেক কাজ বাকী রয়েছে। প্রায় দু’বছর অতিক্রান্ত হলেও অবশিষ্ট কাজগুলো করা হয়নি মর্মে অভিযোগ ভ‚ক্তভোগী পানিবন্দি পরিবারগুলোর।

রোববার সকালে দামোদরপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা রোমানা বেগম, দফির মন্ডল ও জোলেখা বেগমের সাথে কথা হলে জানান, একটু ভারি বৃষ্টি হলেই আমাদের পানিবন্দি হতে হয়, চারিদিকেই পানি আর পানি। ঘরের মেঝেতে পানি উঠে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। একমাত্র যাতায়াতের সড়কটিও পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি হলেই আমাদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে বড় কষ্টে থাকতে হয়। বিলের মাঝে স্বল্প মাটি কেটে ঘরগুলো নির্মাণ করায় ঘরের মাটি বিলের মধ্যে ভেঙে পড়ছে।

তারা আরো জানান, দু’বছর আগে আমাদের ৪০টি পরিবারের জন্য ঘর বানানো হলেও এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর জন্য ২০টি টিউবওয়েল প্রয়োজন কিন্তু দেয়া হয়েছে মাত্র ৬টি। তার মধ্যেও ১টি অচল হয়ে বিলের মধ্যে ডুবে রয়েছে। বাথরুমগুলোতে পানি উঠায় প্রকৃতির ডাক সারতেও আশ্রয়নের বাহিরে যেতে হয়।

এ বিষয়ে শানেরহাট ইউপি মিজানুর রহমান মন্টু বলেন, বিলের মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজটি সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজ তত্তাবধায়নে করেছেন। আমি নিজে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আশ্রয়নের মানুষের জন্য কয়েকটি টিউবওয়েল প্রদান করেছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রাণী রায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই আশ্রয়ন প্রকল্পটি আমি দায়িত্ব নেয়ার আগেই সম্পন্ন করা হয়েছে। তৎকালীন ইউএনও এসব কাজ করেছেন। আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না, তার পরেও বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো।