রাজনৈতিক কারণে পদ্মা সেতুর বিরোধিতায় ছিল বিশ্বব্যাংক

পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের বিরোধিতার পেছনে রাজনৈতিক কারণ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত।

বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যে বিরোধিতা করেছে, তার পেছনে রাজনৈতিক কারণ ছিলো। যমুনা সেতু যারা করেছে, আমরা তাদের প্রি-কোয়ালিফাই করিনি। কারণ পদ্মা সেতু নির্মাণের মতো সক্ষমতা তাদের ছিলো না।’

‘শেখ হাসিনার পদ্মা সেতু নির্মাণ: বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশ তথা উন্নয়নশীল দেশসমূহের এক যুগান্তকারী বিজয়’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে একথা বলেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য আইনুন নিশাত।

পদ্মা সেতুর মান বজায় রাখার বিষয়ে কোনো ধরনের আপস করা হয়নি জানিয়ে আইনুন নিশাত বলেন, ‘যত ধরনের দুর্যোগ হতে পারে সেসব সব মাথায় রেখেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পদ্মা সেতুর কোয়ালিটির বিষয়ে কোনো ধরনের কমপ্রোমাইজ করা হয়নি। আমি এটির নির্মাণ কাজের সঙ্গে শুরু থেকেই ছিলাম। তাই আমি এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলতে পারি’—যোগ করেন তিনি।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেমিনারটির আয়োজন করে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

পদ্মাকে অত্যন্ত শক্তিশালী নদী অভিহিত করে আইনুন নিশাত বলেন, ‘পদ্মার মতো নদীতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে। কত জোরে আঘাত হানতে পারে, সেগুলো মোকাবিলা করবার মতো সক্ষমতা তৈরি করেই আমরা সেতু নির্মাণ করেছি।’

‘পদ্মা সেতু আমরা যখন তৈরি করি, তখন মাছের কথা চিন্তা করেছি। মাছ যাতে ভয় না পায়, এজন্য আমরা শব্দ নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামারগুলোর একটি ব্যবহার করেছি। কিন্তু তারপরও আমরা শব্দ নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

বরিশালের রাস্তাকে আরো প্রশস্ত করার পরামর্শ দিয়ে আইনুন নিশাত বলেন, ‘এটা যদি আমরা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে করাতাম, তবে আরও ভালো হতো। আমাদের বড় প্রকল্প লাগবে। কিন্তু আমরা অনর্থক বড় প্রকল্প যেন না করি, অর্থের কথা যেন চিন্তা করা হয়।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ। অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. সামসুল আলম, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ড. গোলাম রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পুসহ আরও অনেকে আলোচনায় অংশ নেন।