রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষায় বিদেশি বরাদ্দে মন্ত্রণালয়ের সাড়া নেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনতে আগ্রহী উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই)। তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) অব্যয়িত অর্থ এ জন্য বরাদ্দও দিয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি দেয় জিপিই। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনও কোনো জবাব পায়নি সংস্থাটি।

এ অবস্থায় মতামত চেয়ে নতুন চিঠি দেয়া হচ্ছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষা খাতে গ্লোবাল পার্টনারশিপের বোর্ড অব ডিরেক্টর বাংলাদেশকে পিইডিপির আওতায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান অনুমোদন দেয়। প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বন্ধুসুলভ পড়াশোনার মাধ্যমে বাচ্চাদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে এ অর্থ দেয় সংস্থাটি। ২০১৫ সালে এ অনুদান অনুমোদন দেয়া হয়।

পিইডিপি-৩ কর্মসূচির মেয়াদ ছিল ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। এ হিসেবে মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছর। কিন্তু জিপিই বরাদ্দের পুরো টাকা ব্যয় হয়নি। এ অবস্থায় অব্যয়িত অর্থ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বরাদ্দ দিতে আগ্রহ দেখায় সংস্থাটি।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, পিইডিপি-৩ এর আওতায় আন্তর্জাতিক সংস্থা জিপিই ১০০ মিলিয়ন ডলারের অনুদানে মধ্যে অব্যয়িত অর্থ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বরাদ্দ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। যার পরিমাণ ৯ মিলিয়ন ডলার। যা অর্থমন্ত্রী বরাবর চিঠির মাধ্যমে জানায় জিপিই সচিবালয়। গত ৪ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মতামতপত্র মারফত বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডিতে নতুন করে চিঠি দিয়ে তাগাদা দেয় সংস্থাটি। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের মতামত নিতে আবারও চিঠি ইস্যুর অনুরোধ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, সংস্থাটি রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য ৯ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে চায়। যা পিইডিপি প্রকল্পের জন্য আগেই অনুদান দিয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা বা বিভাগের এ সংক্রান্ত মতামত জরুরি। অন্যথায় অর্থব্যয় করা যাবে না। তাই তাদের মতামতের অপেক্ষায় আছে সংস্থাটি। চিঠির মাধ্যমে আবারও বিষয়টি জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ ৬০তম দেশ হিসেবে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই) এর সদস্যপদ অর্জন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে এশিয়া ও আফ্রিকাসহ পৃথিবীর ৫৯টি দেশ প্রতিষ্ঠানটির সদস্য। শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বৈদেশিক সংস্থাগুলোর মধ্যে জিপিই একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে আগ্রহী। জিপিই’র সদস্য হিসেবে শিক্ষা খাতে আমরা এর আগেও অনুদান পেয়েছি। এখন সংস্থাটি রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য এগিয়ে আসতে চাইলে স্বাগত জানাই। কিন্তু চিঠি প্রসঙ্গে এখনও কোনো তথ্য আমার জানা নেই। চিঠি পেলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।