শুধু শিক্ষার্থীদের নয় শিক্ষকদেরও গাড়ি বন্ধ করা উচিত: ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তাহে সোমবারের ক্লাস, পরীক্ষা ও গাড়ি বন্ধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এ টি এম এমদাদুল আলম বলেছেন,শুধু শিক্ষার্থীদের নয় শিক্ষকদেরও গাড়ি বন্ধ করা উচিত। শুধু ছাত্রদের বঞ্চিত করলে হবে? যদি সপ্তাহে সোমবার ক্লাস না নিয়ে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে সত্যিকারের বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় তাহলে আমি এর পক্ষে আছি। এখন আমার বক্তব্য হচ্ছে, প্রতিটি শিক্ষক যদি সপ্তাহে চারদিন ঠিকমতো ক্লাস নেয়, তাহলে পাঁচ ক্লাস নেওয়া লাগে না তো! এটা তো নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন!

সোমবার (৭আগস্ট) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সভাকক্ষে ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক আয়োজিত সংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যদি কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎই সাশ্রয় করতে চায তাহলে কেন শিক্ষকদের গাড়ি সকালে আসবে? আমরা একটি গাড়িতে কয়জন আসি! আমরা কি একটা গাড়িতে অনেকজন আসতে পারি না? কেন আমাদের এসি গাড়ি লাগবে? এই এসির কারণে কত লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে! দেশপ্রেম তো সবার থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতি পাঠ করেন ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এটিএম এমদাদুল আলম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেবা দানে যারা অলসতা প্রকাশ করে ক্লাস এবং অফিসে নিয়মিত ও অনিয়মিতভাবে দীর্ঘদিন অনুস্থিত থেকে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছেন তাদেরকে শ্রেনি ও অফিসে কক্ষে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারের উপস্থিতিতে অগণিতবার উপাচার্যকে অনুরোধ করেছি অথচ উপাচার্য এ বিষয়ে কোন ধরনের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

এছাড়াও তিনি লিখিত বক্তব্যে পোষ্য কোটায় শর্ত শিথিল করার দাবিসহ ১২ টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে কর্মচারীদের চাকুরী হতে অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভিস কন্ডিশনের ৮(১) ধারা বাস্তবায়ন করতে হবে। আই. সি. টি. সেলের উপ-রেজিস্ট্রার জনাব হাসিনা মমতাজ এর চাকুরী হতে অব্যাহতির প্রদানের গৃহীত অমানবিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। আই. সি. টি সেলের টেকনিশিয়ান জনাব ইলিয়াস জোয়াদ্দার এবং হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট এর শিক্ষকের সাথে ভুল বুঝাবুঝির মিমাংসাপত্র অনুযায়ী তার সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জরুরীভাবে চাকুরীতে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সিনিয়র ইমাম জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান এবং শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সিনিয়র ইমাম জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেনগণের পদোন্নতি ও বাতিলকৃত উচ্চতর খেল প্রদান করতে হবে। প্রকৌশল অফিসের ২জন প্রকৌশলী জনাব বাদশা মামুনার রশিদ ও নুর-এ আলমের পদোন্নতির সমস্যা সমাধান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতাবস্থায় মৃত্যুজনিত কারণে কর্মচারীবৃন্দের পরিবারের যোগ্যতম ব্যক্তিকে সিণ্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মৃত্যুর ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যেই চাকুরী প্রদানের বিষয়টি বাস্তবায়নের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সিন্ডিকেটের অনুমোদিত কর্মচারীদের পদোন্নতি নীতিমালার বিশেষ টিকার আলোকে ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে শাখা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি প্রদান করতে হবে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধির কারণে কর্মচারীদের অনর্জিত ইনক্রিমেন্ট প্রদান করতে হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরীক্ষার পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করতে হবে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় গাড়ী চালকদেরকে সাত ধাপের সুবিধা বাস্তবায়ন করতে হবে।সাধারণ কর্মচারীদের পদোন্নতি নীতিমালানুযায়ী বছরে চার বার পদোন্নতি/আপগ্রেডিং এর মাধ্যমে পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।

এসময় উল্লিখিত দাবিগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এ টি এম এমদাদুল আলম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু হুরাইরা, দপ্তর সম্পাদক মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রচার-প্রকাশনা ও সাহিত্য সম্পাদক রাকিব হোসেন রেদওয়ান, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শাহেদুল ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমানুল সোহানসহ অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ। এছাড়াও কর্মকর্তা সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।