শ্রমিক নির্যাতন: নিষেধাজ্ঞার মুখে মালয়েশীয় পাম অয়েল কোম্পানি

জোরপূর্বক কাজ করানো, শিশুশ্রম, অভিবাসীদের কাগজপত্র আটকে রাখাসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে কর্মী নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়ায় মালয়েশিয়ার অন্যতম পাম অয়েল উৎপাদক এফজিভি হোল্ডিংসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাৎক্ষণিকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা (সিবিপি)।

সিবিপি’র বাণিজ্য শাখার সহকারী নির্বাহী কমিশনার ব্রেন্ডা স্মিথ বলেন, এ ধরনের পণ্য উৎপাদনে জোরপূর্বক শ্রমের ব্যবহার থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা তৈরি করতে পারে।

তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে বিশদভাবে কিছু বলতে পারব না। তবে মার্কিন আমদানিকারকদের পরামর্শ দিব, যারা পাম অয়েল উৎপাদকদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন, তারা যেন সরবরাহ ব্যবস্থার দিকে নজর দেন এবং সেখানে শ্রম ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন করেন।

মার্কিন সংস্থাটি জানিয়েছে, এফজিভির শ্রম ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রায় এক বছরের তদন্তের ফলাফল হচ্ছে এই নিষেধাজ্ঞা। তদন্তকারীরা মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্বল শ্রমিকদের নির্যাতন, প্রতারণা, শারীরিক ও যৌন সহিংসতা, হুমকি-ধামকি দেয়া, পরিচয়পত্র আটকে রাখার নমুনা দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি সিবিপির।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগের জবাবে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম পাম অয়েল উৎপাদক এফজিভি জানিয়েছে, তারা গত কয়েক বছর ধরে শ্রম ব্যবস্থার উন্নয়নে দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তাদের অভিবাসী কর্মীরা মালয়েশিয়ায় আসার আগেই যার যার দায়িত্ব, কাজের সুযোগ ও অধিকারগুলোর বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া শ্রমিকদের সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরিও দেয়া হচ্ছে।

শ্রমিকদের উন্নত বাসস্থানের জন্য গত তিন বছরে ৩৫০ মিলিয়ন রিঙ্গিতের (৮৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার) বেশি খরচ করেছে বলে দাবি করেছে এফজিভি হোল্ডিংস কর্তৃপক্ষ। অভিবাসীদের পাসপোর্ট আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, কর্মীদের নথিপত্র সুরক্ষিত রাখতে তারা ৩২ হাজার ৩৫০টি বক্স তৈরি করে দিয়েছে।

মালয়েশিয়ায় পাম গাছ রোপণের কাজে নিয়োজিত ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ অন্তত ৩ লাখ ৩৭ হাজার কর্মী অভিবাসী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ভারত, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক।

গত এপ্রিলে সিবিপির কাছে মালয়েশিয়ার আরেকটি পাম অয়েল উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সিমে ডার্বি প্লান্টেশনের বিরুদ্ধে কর্মী নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়েছে লিবার্টি শেয়ারড নামে একটি পাচারবিরোধী সংগঠন।
সূত্র: আল জাজিরা