ইউক্রেনের বাইকুনুর আঙুর চাষে

সফল হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কুড়িগ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রায়হান ফারুক

কুড়িগ্রামে ইউক্রেনের বাইকুনুর আঙুর চাষে সফল হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কৃষি উদ্যোক্তা মো. আবু রায়হান ফারুক। বাইরের দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের আঙ্গুরের চারা সংগ্রহ করে সমন্বিত ফলচাষ করে লাভবান হওয়ার আশা তার।

আবু রায়হান ফারুক হোসেন মাস্টার্স পাশ করে নানা জাতের ফল ও সব্জির সমন্বিত বাগান গড়ে তুলেছেন। সে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মুক্তারাম এলাকার কাজী হাবিবুর রহমানের ছেলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আবু রায়হান ফারুকের ১ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে আঙ্গুরের ক্ষেত। গত বছর ২০০টি আঙুর গাছের চারা রোপণ করেছেন তিনি। এ বছর প্রায় সব গাছে আঙুর ফল ধরেছে। বাগানে সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে ইউক্রেনের বাইকুনুর জাতের আঙ্গুরের গাছ।

এছাড়াও অ্যাপোলো, মনড্রোফ, রাবেয়া, সুলতানা, পেসট্রিজ, গ্রীনলংসহ ৪০ জাতের গাছ রয়েছে। কংক্রিটের খুঁটি আর সুতার জালে তৈরি মাঁচায় ঝুলছে আঙ্গুরের থোকা। দোআঁশ ও পানি নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত জায়গায় খুব সহজে আঙুর চাষ করা যায়। অন্যান্য ফল চাষের মতো পরিমিত সেচ ব্যবস্থা ও পরিচর্যা করলে আঙ্গুরচাষে সফল হওয়া সম্ভব বলে জানালেন এই উদ্যোক্তা।

আবু রায়হান ফারুক বলেন, পৌর শহরের রুহুল আমীন নামের এক বড় ভাইয়ের ছাদবাগানে এই বাইকুনুর জাতের আঙ্গুুর দেখে চাষাবাদ শুরু করি। গত বছর রুহুল আমীন ভাই আমাকে ২০০ চারা সংগ্রহ করে দিয়েছেন। আমি এক বিঘা জমিতে অনান্য জাতের আঙ্গুর গাছের পাশাপাশি ইউক্রেনের বাইকুনুর আঙ্গুর চাষ করেছি। ফুল আসার পর থেকে ১২০ দিনের মধ্যে আঙ্গুর গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায়। বিঘায় গাছ রোপণ থেকে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত ৮০-৯০ হাজার টাকা খরচ পড়ে।

বাইকুনুর আঙুর পাকলে লাল রং ধারণ করে। দেখতে সুন্দর আর সুমিষ্ট স্বাদ হওয়ায় বাইকুনুর জাতের আঙ্গুরের দাম ভালো পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছে বর্তমানে আঙ্গুর দেখা যাচ্ছে। আর ৩০ দিনের মধ্যে প্রতি গাছ থেকে ৪ থেকে ৫ কেজি আঙ্গুর সংগ্রহ করা যাবে। বর্তমান বাজারে এ জাতের আঙ্গুরের কেজি প্রতি ৪০০ টাকা। আশা করছি ফলন ও দাম ভালো পাবো। এর আগে ফারুক এই ফার্মে রোপন করেছেন মাল্টা পেয়ারা, আপেলকুলসহ নানা জাতের ফল এসব উৎপাদন করে তিনি বেশ লাভবান হয়েছেন।

প্রতিদিন তার এই আঙ্গুর বাগান দেখতে দুর দুরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসছে। আবু রায়হান নিজে আঙ্গুর বাগানে শ্রম দেন পরিচর্যা করেন। তাকে সহায়তা করে আট থেকে দশজন শ্রমিক।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আমাদের দেশের মাটি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আঙ্গুর চাষের সম্ভাবনা খুব একটা আশাব্যাঞ্জক নয়। জেলায় আপাতত আঙ্গুুর চাষের কোনো তথ্য নেই। নতুন উদ্যোক্তাদের এমন নতুন চাষাবাদ খুবই সম্ভাবনার বিষয়। ফারুকের আঙুর চাষে কৃষি বিভাগের পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে বলেও জানান তিনি।

আগামী প্রজন্ম কৃষিতে নতুন সম্ভবনার দিকে আগ্রহী হলে বেকার সমস্যা ঘুচবে,সমৃদ্ধ হবে আগামী দিনে কৃষি,এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।