সাকিবের ঘূর্ণিতে জিম্বাবুয়েকে বড় ব্যবধানে হারাল টাইগাররা

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাকিবের ঘূর্ণিতে ১২১ রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইসিংস। ফলে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ১৫৫ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব একাই নিয়েছেন ৫ উইকেট।

এর আগে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৭৬ রান তুলে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০২ রান করেন লিটন দাস। জয়ের জন্য ২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২১ রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইসিংস।
বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৪ রানে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ফিরে যান মারুমা (০)। ১৩ রানে ওয়েসলি মাধভেরেকে (৯) ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান তাসকিন আহমেদ। অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর আর অভিষিক্ত ডিওন মেয়ার্স হাল ধরার চেষ্টা করেন। তবে ১৮ রান করা মেয়ার্সকে ফিরিয়ে ৩৬ রানেই জুটির অবসান ঘটান শরিফুল।

ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক টেইলরকে (২৪) তাসকিনের তালুবন্দি করেন। এর মাধ্যমে তিনি মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ছাড়িয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হয়ে যান।

এছাড়া রায়ান বার্লকেও (৬) আফিফের তালুবন্দি করেছেন সাকিব। ১০৫ রানে জিম্বাবুয়ের ৫ উইকেটের পতন হয়। বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়া লুক জঙওয়ে (০) রান-আউট হয়ে যান। এরপর মুজরাবানিকে (২) লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে তৃতীয় শিকার ধরেন সাকিব।

দ্রুত উইকেট পতনের মাঝেই ৪৭ বলে ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন চাকাভা।

সেই চাকাভাকে ৫৪ রানে ফিরিয়ে চার নম্বর শিকার ধরেন সাকিব। তার পঞ্চম শিকার রিচার্ড এনগ্রাভা (০)। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়েছিলেন টিমিসেন মারুমা। তার পক্ষে ব্যাট করা সম্ভব হয়নি। তাই ২৮.৫ ওভারে মাত্র ১২১ রানে থামে জিম্বাবুয়ে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুই ওভারে কোনো রানই করতে পারেননি দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। এদিকে, তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই জিম্বাবুয়ের পেসার মুজারাবানির বলে কাট করতে চেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক চাকাভার গ্লাভসে জমা হয়।

৭ বল খেলে কোনো রান করার আগেই বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশি ওপেনারকে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মোট ৩৪ বার শূন্য রানে বিদায় নিলেন তামিম।

তামিম বিদায় নেওয়ার পর তিনে নামা সাকিব ক্রিজে এসেই ব্রাউন্ডারি হাঁকান। রানের চাকা সচল রাখার দিকেও দৃষ্টি দেন তিনি। অন্যদিকে লিটন তখনও ধীরে সুস্থে খেলার দিকেই মনোযোগী। কিন্তু মুজারাবানির করা নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে অফসাইডের বাইরের শর্ট বলে কাট করতে গিয়ে বার্লের হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় এই বাঁহাতির ২৫ বলে ৩ চারে সাজানো ১৯ রানের ইনিংস।

সাকিব বিদায় নেওয়ার পর মিঠুন আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন। দলের রানও ৫০ ছাড়ায়। কিন্তু তিনিও কাট করতে গিয়েই ১৯ বলে ৪ চারে ১৯ রানের ইনিংস খেলে চাতারার শিকার হন। চাতারার লেন্থ বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন।

এরপর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও বেশিক্ষণ টেকেননি। গাভারার বলে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ৫ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনিও।

৭৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের রানের চাকা সচল থাকে লিটন ও মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে। লিটনের সঙ্গে ৯৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ঘুরের দাঁড়ানোর পথ দেখাচ্ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ছুটছিলেন ফিফটির পথেও। কিন্তু লুক জঙওয়ের লাফিয়ে ওঠা স্লোয়ারে পুল শট খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে মাহমুদুল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৩৩ রান।

ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে ২৫ রান করে বাদ পড়া লিটন দাস দীর্ঘদিন পর ওপেনিংয়ে ফিরেই সেঞ্চুরি তুলে নেন। আউট হওয়ার আগে ১১৪ বলে ১০২ রান করেন লিটন।

এরপর আফিফ ও মেহেদী হাত খুলে খেলেন। ৩৫ বলে ৪৫ করেন আফিফ আর ২৫ বলে ২৬ করেন মেহেদী।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন