চাষীর স্বপ্ন ভঙ্গ!

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অনাবৃষ্টিতে গাছের আমসহ গ্রীস্মকালীন ফল ঝরে পড়ছে

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস যাবত অনাবৃষ্টি জনিত খরায় মাটিতে রসের অভাবে গাছের আম সহ গ্রীস্মকালীন ফল ঝরে পড়েছে। ফলে চাষীদের সুখের স্বপ্ন ভেঙ্গে আগামী দিনের চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহের পরে বৃষ্টির ফোটা আর মাটিতে পড়েনি। দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস বৃষ্টির অভাবে মাটি রস শূন্য হয়ে পড়েছে। সেচ প্রকল্প ভূক্ত এলাকার বাইরে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। রাস্তা মাঠঘাটের ঘাসপাতা লতা শুকিয়ে যাচ্ছে। দুপুর রোদে উত্তপ্ত মাটিতে পা ঝলসে যায়। সেচ প্রকল্প এলাকার বাইরে সাধারণ পুকুর ডোবা নালা খাল বিল শুকিয়ে তলদেশ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ১/২টি গভীর পুকুরে সামান্য পানি থাকলেও তা মজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এই প্রচন্ড খরায় উত্তপ্ত দুপুর রোদে বড় বড় গাছপালার পাতা নুইয়ে পড়ছে।

খরতাপে আর উত্তপ্ত আবাহওয়ায় গাছ মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে না। তাই রসের অভাবে কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকায় গাছের আম, লিচু, জাম, জামরুল, জাম্বুরা, পাতি লেবু শুকিয়ে ঝরে গেছে। এসব ফল ছাড়াও ক্ষীরা, বাঙ্গি, বিভিন্ন শাক সবজি বিরুপ আবাহওয়ায় আশানুরুপ বৃদ্ধি পাচ্ছে না। শাকসবজি ফলের স্বাদ ভাল নেই। একদিকে আমের অফ ইয়ার। গাছে গাছে ছোট ছোট আমের সমারহ।

গত বছর আম্ফানে সম্পুর্ণ আম ঝরে যায় এবং বহু গাছ ভেঙ্গে বিনষ্ট হয়। গেল বছরের ব্যপক ক্ষতির পরে চলতি মৌসুমে খরতাপে আম ঝরে পড়ায় চাষীর ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’ সমতূল্য আঘাত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ‘সেচ দেওয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু আম বাগান উচু জমিতে এবং অধিকাংশ সেচ প্রকল্প বর্হিভূত এলাকায় থাকায় চাষীরা সেচ দিতে পারেনি। আর মাঝে মাঝে মেঘলা আবাহওয়া দেখে এই বুঝি বৃষ্টি এল ভেবে কৃষক বসে ছিল।’

আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান, ‘ক্রমান্বয়ে সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় আম ঝরতে ঝরতে বহু বাগানের আম এক তৃতীয়াংশে এসে ঠেকেছে। এতে গেল বছরের ক্ষতি কাটায়ে উঠে চাষীর লাভের মুখ দেখার আশা ভেঙ্গে গেছে। ভেঙ্গে গেছে চাষীর পরিবার সুখে শান্তিতে থাকার আশা। হতাশার গহ্বরে নিমজ্জিত হয়েছে চাষী পরিবারের ভাল লাগার সমস্ত স্বাদ আহ্লাদ।’