সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে গাছের ডালে ঝুলানো সদ্যজাত শিশুটির দত্তক পেলেন এক শিক্ষক দম্পতি

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা সদ্যজাত শিশু ‘মহারাজ’ এর দত্তক পেলেন এক শিক্ষক দম্পতি। সোমবার সাতক্ষীরা শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক রায়ে এই নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালত শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

এ সংক্রান্ত এটি চিঠিও পৌছেছে দত্তক গ্রহীতা তালা উপজেলার রাঢ়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিখা রাণী চৌধুরী ও তার স্বামী যশোরের সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বানিজ্য মহাবিদ্যালয়ের কমপিউটার শিক্ষক বরুন কুমার পালের হাতে। তাদের ১৭ বছর বয়সী ছেলে সৌম্য পাল বছর দু’য়েক আগে তুচ্ছ কারণে আত্মহত্যা করে। শিখা রানী চৌধুরী ও বরুন পাল সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরীর মেয়ে ও জামাতা।

আদালত তার পর্যবেক্ষণে উলে­খ করেন যে, যেহেতু সদ্যজাত শিশুটিকে কালিগঞ্জের কাঁকশিয়ালী শ্মশানের কাছে একটি গাছে ব্যাগে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সেহেতু শিশুটি হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের বলে অনুমিত হয়। এই বিবেচনায় মোট ২৯ টি আবেদন পত্র থেকে যাচাই বাছাই করে কেবলমাত্র আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করে সামাজিক ধর্মীয় ও অন্যান্য দৃষ্টিকোন থেকে আদালত শিশুটির মঙ্গলার্থে উক্ত শিক্ষক দম্পতিকে দত্তক দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করলেন। শিশুটি এখনও হাসপাতালে রয়েছে। তার বয়স সবে দশ দিন।

উলে­খ্য, গত ৪ অক্টোবর সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কাঁকশিয়ালী শ্মশানের কাছে একটি গাছে বাজার ব্যাগে দুই এক ঘন্টা আগে ভুমিষ্ঠ হওয়া শিশুটিকে কে বা কারা ঝুলিয়ে রেখে যায়। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে শিশুটিকে প্রথমে সার্জিকাল ক্লিনিক ও পরে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্থানীয়রা ফুটফুটে এই শিশুটির নাম রাখেন ‘মহারাজ’ শিশুটিকে দত্তক পেতে ২৯ টি আবেদনপত্র আসে।

কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অীফসার মো. মনিরুজ্জামান রাসেলের নেতৃত্বে গঠিত শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটি গ্রহনের জন্য আবেদন আহবান করেন। এসব আবেদন শিশু কল্যাণ বোর্ড সাতক্ষীরা শিশু আদালতে পাঠায়। আদালত সোমবার এক আদেশে শিশু ‘মহারাজ’কে ওই শিক্ষক দম্পতির হাতে দত্তক হিসাবে তুলে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এখন থেকে তারাই হবেন তার পালক পিতামাতা।