সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে চায়

‘স্পটলাইট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে সিঙ্গাপুর সহযাত্রী হতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিবহন ও বাণিজ্য সম্পর্কের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী মি. এস. ঈশ্বরন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) অনুষ্ঠিত ‌ওয়েবিনারে তিনি জানান, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আরও বিনিয়োগ করতে চায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অ্যাগ্রো বিজিনিস, ফুড প্রসেসিং, আইটি, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন সেক্টরে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উনয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন (এসবিএফ), এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুর, সিঙ্গাপুর ফুড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসএফএমএ), বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এবং বাংলাদেশ বিজিনেস চেম্বার অফ সিঙ্গাপুর (বিডিএইচএএম) এর যৌথ উদ্যোগে ‘স্পট লাইট বাংলাদেশ’ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে এসবিএফ’র ভাইস চেয়ারম্যান (দক্ষিণ এশিয়া বিজনেস গ্রুপ) মি. প্রসূন মুখোপ্যাধ্যায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন।

এসময় এস. ঈশ্বরনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই সিঙ্গাপুর উন্নয়নের সহযোগী হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। করোনাকালে দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে কাজ করে আসছে। সিঙ্গাপুর অনেক আগ থেকেই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো, যা দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশ কিছু ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ২০২১, এসডিজি বাস্তবায়ন, ২০৩১, ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেই লক্ষ্যেই আমারা আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ একশত ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণসহ বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। যার ফলে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে নিরাপদ লাভজনক বিনিয়োগের অন্যতম ঠিকানা। বাংলাদেশ বিশ্বের ৪৩তম অর্থনীতির দেশ হলেও ২০৩০ সালে ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ রফতানিকারক দেশ এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের অনত্যম সহযোগী। আগামীতে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।’

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে আমরা বিনিয়োগকারীদের ওএসএস মাধ্যমে ১৫টি সংস্থার ৪৭টি সেবা দিয়ে আসছি এবং এ বছরের মধ্যেই ৩৫টি সংস্থার ১৫৪টি সেবা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সবসময় বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার জন্য বিডা প্রস্তুত।’ এসময়ে তিনি প্যানেল ডিসকাশনের নেতৃত্ব দেন।

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন চেম্বার অফ কমার্সের প্রতিনিধিবৃন্দ ও দুই দেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সংযুক্ত ছিলেন।

প্যানেল ডিসকাশনে সমাপনি বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এমনকি এই করোনাকালে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমলেও, সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা দিয়েছেন। বিনিয়োগ সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমারা ইতোমধ্যে অনেক সংস্কার করেছি এবং করে যাচ্ছি, যা বাংলাদেশকে বিদেশি বিনিয়োগের অন্যতম নিরাপদ গন্তব্যে পরিণত করেছে।’ এসময় তিনি সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।