সৌদি যুবরাজের অন্তরে এক, মুখে আরেক কথা?

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাশগজিকে একজন ‘বিপজ্জনক ইসলামিস্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট৷

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের সময় যুবরাজ সালমান খাশগজিকে ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেন বলে দাবি ঐ পত্রিকার৷ বোল্টনসহ ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরেই মুসলিম ব্রাদারহুড সংগঠনের বিরোধী৷

সৌদি কর্তৃপক্ষ জনসমক্ষে খাশগজির মৃত্যুর কথা স্বীকার করার আগে এই টেলিফোন আলাপ হয় বলে জানা গেছে৷ সেই সময় যুবরাজ সালমান কুশনার ও বোল্টনকে দুই দেশের সম্পর্ক রক্ষায় কাজ করারও আহ্বান জানান৷

আলোচিত এই টেলিফোন আলাপ সম্পর্কে জানেন এমন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ কর্মকর্তারা কথা বলেন বলে জানায় পত্রিকাটি৷

তবে আলাপের সময় জন বোল্টন খাশগজি সম্পর্কে যুবরাজের বক্তব্য বিশ্বাস করছেন, এমন কোনো লক্ষণ দেখাননি বলে ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান এক কর্মকর্তা৷

উল্লেখ্য, জামাল খাশগজি ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন৷

এদিকে যুবরাজ সালমান টেলিফোন আলাপে খাশগজিকে ‘বিপজ্জনক ইসলামিস্ট’ বললেও গত সপ্তাহে এক আলোচনা সভায় তাঁর হত্যাকে ‘সব সৌদির জন্য বেদনাদায়ক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন৷ ‘‘এই ঘটনা (হত্যা) গ্রহণযোগ্য নয়,’’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি৷

সৌদি আরব সরকারও এক বিবৃতিতে খাশগজির মৃত্যুকে ‘মারাত্মক ভুল’ ও ‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি’ বলে আখ্যায়িত করেছিল৷

হোয়াইট হাউস আলোচিত ঐ টেলিফোন আলাপ সম্পর্কে তথ্য দিতে রাজি হয়নি৷ কিংবা কুশনার ও যুবরাজের মধ্যে কতবার টেলিফোনে কথা হয়েছে সেটিও জানায়নি৷ তবে এই বিষয়ে জ্ঞাত এক কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, বোল্টন ও কুশনারের সঙ্গে যুবরাজের শেষ কথা হয়েছে ৯ অক্টোবর৷

উল্লেখ্য, ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে ২ অক্টোবর খাশগজিকে হত্যা করা হয়৷

এদিকে খাশগজির পরিবার যুবরাজ সালমানের মন্তব্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছে৷ ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে খাশগজির পরিবার জানায়, ‘‘জামাল খাশগজি মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য ছিলেন না৷ গত কয়েক বছরে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এমন দাবি তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন৷ জামাল খাশগজি কোনোভাবেই বিপজ্জনক ব্যক্তি ছিলেন না৷ এমন দাবি করা হাস্যকর৷’’

-ডয়চে ভেলে