স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা : ইমাদুলের আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রত্যাহার

যৌতুকের দাবিতে শরীরে কেরোসিন ঢেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে সাতক্ষীরার ইমাদুলের মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে গত ১১ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

রোববার (১৫ নভেম্বর) এই রায় প্রত্যাহার (রিকল) করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ মামলায় পুনরায় আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আজ ইমাদুলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম বায়জিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

জানা গেছে, ২০০২ সালের ১৯ জুলাই ইমাদুলের স্ত্রী রেশমা খাতুনকে নির্যাতন করে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর রেশমাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছর ২৯ জুলাই রেশমার মৃত্যু হয়।

এর আগেই ২১ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দেন রেশমা খাতুন। তবে নির্যাতন ও আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় ওই দিনই (১৯ জুলাই) রেশমার স্বামী ইমাদুল, শ্বশুর শহিদুল সরদার, শাশুড়ি মোছা. ছবি বিবি ও দেবর রাজু আহমদকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেন রেশমার বাবা আব্দুর রাজ্জাক। এরপর তদন্ত শেষে চারজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় সেখানকার পুলিশ।

বিচার শেষে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০০৮ সালের ১১ আগস্ট এক রায়ে ইমাদুলকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অপর তিন আসামিকে খালাস দেয়া হয়। এরপর ইমাদুলের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স। একইসঙ্গে আপিল করেন কারাবন্দি ইমাদুল। হাইকোর্টে আবেদনের ওপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ইমাদুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ইমাদুল। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। সেই রায়টি আজ প্রত্যাহার (রিকল) করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ মামলায় পুনরায় আপিল শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।