হত্যা করে নাটক সাজান ২ মেজর : পলিনের বাবা

প্রায় এক যুগ আগে ময়মনসিংহের ক্যাডেট শর্মিলা শাহরিন পলিন হত্যা মামলায় দুই মেজরসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে মামলা চলবে বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পলিনের বাবা আবুল বাশার পাটোয়ারী।

সোমবার এ-সংক্রান্ত আসামিপক্ষের আবেদন খারিজের পর এক প্রতিক্রিয়ায় পরিবর্তন ডটকমকে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়েকে হত্যা করে দুই মেজর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছিলেন। এমনকি তারা প্রশাসনকে হাত করে এই মামলায় পদে পদে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন।’

পলিনের বাবা বলেন, ‘মেয়ের মৃত্যুর পর আমাদের দাবি সত্ত্বেও নাজমুল (প্রধান আসামি মেজর নাজমুল ইসলাম) সেই কলেজে এমনকি সেনাবাহনীতে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ, সিআইডি, সেনা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্তে হস্তক্ষেপ করে ভুল প্রতিবেদন দেখিয়েছে। এখন উচ্চ আদালতের রায়ের পর ন্যায়বিচার পাব বলে আমার বিশ্বাস।’

তিনি বলেন, ‘খুনের আসামি হওয়ার পরও নাজমুল সেনাবাহিনীতে কর্মরত এবং তার প্রমোশনও হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’

এ সময় পলিনের বাবা তার সন্তান হত্যার অভিযোগে আসামির বিচার দাবি করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী শর্মিলা শাহরিন পলিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার দিনই ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন কলেজের প্রিন্সিপাল খাদেমুল ইসলাম।

পরে একই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি পলিনের বাবা আবুল বাশার পাটোয়ারি ময়মনসিংহ জেলা জজ আদালতে কারো নাম উল্লেখ না করে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত হত্যার ঘটনা বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

পরে ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলামিন ২০১৩ সালের ২২ মে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চলতি বছরের ৩ মার্চ ময়মনসিংহের জজ আদালত মেজর নাজমুল হকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

অন্য চার অভিযুক্ত হলেন, ক্যাডেট কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আবুল হোসেন, নন কমিশন্ড অফিসার মো. নওশেরুজ্জামান, হোস্টেলের আয়া হেনা বেগম ও মেজর মনির আহমেদ চৌধুরী।

পাঁচ আসামির মধ্যে মেজর নাজমুলসহ চারজন জামিনে রয়েছেন। এছাড়া মামলার অন্য আসামি মেজর মনির পলাতক।