পাকিস্তানের ক্রিকেট বলেই বোধ হয় এমন হয়!

সেই মে মাসে অবসর নিয়েছেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কিনা (পিসিবি) ইউনিস খানকে বিদায় সংবর্ধনা দিতে যাচ্ছে এখন। শুধু ইউনিস নন, এক খরচেই তারা মিসবাহ-উল-হক আর শহীদ আফ্রিদির বিদায় সংবর্ধনাটাও সেরে ফেলতে চাচ্ছে পিসিবি।

বোর্ডের এ সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি ইউনিসের। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই সংবর্ধনায় তিনি অংশ নেবেন না। কারণটা সোজাসাপটা ব্যাখ্যাও করেছেন, ‘সারা দুনিয়াতে সাবেক অধিনায়ক ও দীর্ঘদিন ধরে খেলা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়েরা আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে বিদায় নেন। আর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সংবর্ধনার আয়োজন করছে এখন! এই সংবর্ধনার কোনো মানে আমাদের কাছে নেই। সেই মে মাসে অবসর নিয়েছি। এখন এই সংবর্ধনায় অংশ নিয়ে কী লাভ?’

পিসিবির তাঁকে টাকার ‘লোভ’ দেখিয়েছিল। কিন্তু ইউনিস তাতেও গলেননি, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একজন কর্মকর্তা আমাকে ফোন করে এই সংবর্ধনায় অংশ নেওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বলেছেন, এই অনুষ্ঠানে যোগ দিলে আমি নাকি বেশ বড় অঙ্কের টাকাই পুরস্কার হিসেবে পাব। কিন্তু আমি কখনোই টাকার পেছনে ছুটিনি। এই সংবর্ধনার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’

গত মে মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে সমাপ্তি টানেন ইউনিস। মাঠেই সেদিন সতীর্থদের সংবর্ধনায় আপ্লুত হন। কিন্তু তাঁর মতো একজন ক্রিকেটারের আরও অনেক কিছু প্রাপ্য ছিল। হয়তে শচীন টেন্ডুলকার কিংবা কুমার সাঙ্গাকারা যেভাবে বিদায় নিয়েছিলেন, তার মতো কিছু। ইউনিস অবশ্য এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ মনের মধ্যে পুষে রাখতে চান না, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমি যে সংবর্ধনা পেয়েছি, সেটিই যথেষ্ট। আমার আত্মসম্মানবোধটা অনেক বেশি। এর চেয়ে বড় কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড খুব বেশি ক্রিকেটারের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করেছে বলে আমি মনে করি না।’

১১৮টি টেস্ট ও ২৬৫টি ওয়ানডে ছাড়াও ২৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ইউনিস। তিন সংস্করণে তাঁর মোট রান যথাক্রমে ১০ হাজার ৯৯, ৭ হাজার ২৪৯ ও ৪৪২। পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়কের আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪১—যার ৩৪টি টেস্টে। প্রথম পাকিস্তানি হিসেবে টেস্টে ১০ হাজার রান, তাঁকেও সসম্মানে বিদায় জানাতে পারল না পিসিবি! পাকিস্তানের ক্রিকেট বলেই বোধ হয় এসব সম্ভব!