রেললাইন অবরোধ, ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ

চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে রাজধানীর মালিবাগ রেলগেটে একটি ট্রেন আটকে রেললাইন অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী কর্মচারীরা। আজ রবিবার সকাল ১০টায় কমলাপুর থেকে কিশোরগঞ্জগামী এগারো সিন্ধুর ট্রেনটি আটকে দেওয়া হয়। ফলে এই মুহূর্তে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রেলওয়েতে নিয়োগ পাওয়া অস্থায়ী শ্রমিকদের (টিএলআর) চাকরি ফেরত দেওয়া, স্থায়ীকরণ, আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল এবং নিয়োগবিধি ২০২০ সংশোধন করে আগের মতো চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস বহাল রাখার দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিক প্রতিনিধি মোহাম্মদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারি গেজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে রেলপথ মন্ত্রী, রেলওয়ে সচিব ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার গিয়েও কোনো সমাধান হয়নি। সমাধান না পাওয়ায় অস্থায়ী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি ও হাজারো শ্রমিকের বিক্ষোভ চলছে।

এর আগে চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে হঠাৎ করেই গত ১৬ জুলাই রেলের অস্থায়ী কর্মীরা ট্রেন আটকে রাজধানীর এফডিসি রেলগেটে রেললাইনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।

পরে পুলিশের উপস্থিতিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেনের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা রেললাইন থেকে অবস্থান তুলে নেন। সেখান থেকে রেল ভবনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
যত ঘণ্টা কাজ করেন তত ঘণ্টার মজুরি পান রেলওয়ে টিএলআর শ্রমিকরা। প্রায় ১০ বছর অস্থায়ী ভিত্তিতে রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।

কিন্তু ২০২০ সালের নিয়োগবিধিতে তাঁদের বেসরকারিভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন রেলওয়ের প্রায় সাত হাজার টিএলআর শ্রমিক। চলতি বছরের জুন মাস থেকে তাঁদের অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ বাতিল হয়ে গেছে। এর ফলে তাঁরা চাকরি স্থায়ীকরণ ও আউটসোর্সিংয়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করে যাচ্ছেন।

যদিও গত ৭ আগস্ট রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।

সেখানে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের চাকরি থাকবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের বেতন সঠিকভাবে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এর পরের বিষয়টি আবার বিবেচনা করতে রেলপথ মন্ত্রী নিজেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করবেন। নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের আন্দোলনে না যেতে রেলমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বৈঠক-পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দাবি তুলেছেন। সেই দাবি পূরণ না হওয়া এবং সমস্যার স্থায়ী মীমাংসার জন্য অস্থায়ী শ্রমিকরা আজ আবারও আন্দোলনে নেমেছেন।