নানান অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে জবিতে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আজ (৫ বৈশাখ-১৪৩১ বঙ্গাব্দ/ ১৮ এপ্রিল-২০২৪ খ্রি.) পুরানো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাড়ম্বরে পালিত হয় বাংলা নববর্ষ-১৪৩১। বাংলা নববর্ষকে-কে বরণ করে নিতে উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, পিএইচডি এর নেতৃত্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সকাল ৯.৩০মিনিটে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়।
শোভাযাত্রাটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার ঘুরে ভিক্টোরিয়া পার্ক হয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কর্মচারীসহ সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ অংশগ্রহণ করেন।
এবারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য করে এবং ‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন/ মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে।
শোভাযাত্রায় রিকশাচিত্রের পাশাপাশি সংকটাপন্ন প্রাণি প্রজাতির মধ্যে কুমিরের মোটিফ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও লক্ষীপেঁচা, ফুল, মৌমাছি, পাতা, বাঘ এর মুখোশ এবং গ্রামবাংলার লোক কারুকলার নিদর্শনসমূহ স্থান পায়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটির আয়োজনের দায়িত্বে ছিল চারুকলা অনুষদ।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান:
মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে সকাল ১০.১৫ মিনিটে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, পিএইচডি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া সত্ত্বেও সীমিত অবকাঠামো ও স্বল্প পরিসর নিয়েও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলের সহযোগিতায় হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যায়ের মূল প্রাণ হচ্ছে শিক্ষার্থী, আর এধরণের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারছে। পশ্চিম বঙ্গ, পূর্ব বঙ্গ, পূর্ব পাকিস্তান তারপর বাংলাদেশ এবং এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধুর এই অবদান যেন আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের চিন্তা চেতনায় ধারন করতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, “বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করতে পারি। পারিবারিকভাবেই নারী পুরুষ সমতাকরনে, নারীকে মানুষ ভাবার মানষিকতার শিক্ষা দিতে হবে, নতুন প্রজন্মকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবিষয়ে লিখতে হবে, বলতে হবে।”
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য প্রদান করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কর্মচারী সমিতির সভাপতি।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল সংগীত বিভাগের পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠান, নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে যাত্রাপালা। এছাড়াও বিকেলে জবি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠির পরিবেশনা এবং জবি ব্যান্ড মিউজিক এসোসিয়েশনের আয়োজনে ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হবে। এসময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সকলে আনন্দে নেচে গেয়ে উদ্বেলিত ও উৎফুল্ল হয়ে বর্ষবরণকে আনন্দবহ করে তুলে।
প্রকাশনা প্রদর্শনী:
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহিদ রফিক ভবনের নীচতলায় দিনব্যাপী ‘প্রকাশনা প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ, জার্নাল, সাময়িকী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বার্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রকাশিত গ্রন্থ স্থান পায়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন