একাই মসজিদে গুলি চালান ট্যারান্ট : নিউজিল্যান্ড পুলিশ

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলাকারী একাই এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটান। ব্রেনটন টেরেন্ট নামে ওই বন্দুকধারীর গুলিতে ৫০ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এসব তথ্য জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের পুলিশ।

দেশটির ‍পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ রোববার জানান, মসজিদে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত যুবক টেরেন্ট একাই হামলা চালিয়েছিল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও তিনজনকে আটক করা হলেও তাদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়া হবে। তিনি এও বলেন, এ নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাইছে না পুলিশ।

হামলাকারী সন্দেহে গ্রেফতার যুবক টেরেন্টকে শনিবার আদালতে হাজির করা হয়। আদালত আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে জানিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ জানিয়েছেন, মসজিদে বন্দুক হামলার জন্য কেবল ২৮ বছর বয়সী টেরেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা সাহসের সঙ্গে তাকে গুলি ছোড়া থেকে নিবৃত্ত করে আটক করেছে।

কমিশনার বুশ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আটক অপর দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের মধ্যে এক নারীকে কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেয়া হয়েছে। আর অপর এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রসংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৮ বছর বয়সী একজনকে আটক করা হয়। সোমবার তাকে আদালতে তোলা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

টেরেন্টকে ৫ এপ্রিল ফের আদালতে তোলা হবে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার জানান, এ ঘটনায় সত্যিকার অর্থে কতজন জড়িত ছিল তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছি না’। ব্রেনটন টেরেন্টকে আগামী ৫ এপ্রিল আবারও আদালতে তোলা হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে ৫০ জন মারা যান। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৮ জন। এই সন্ত্রাসী হামলার সময় আল নূর মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। তারা মসজিদে ঢোকার কিছুক্ষণ আগে এক পথচারীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ফিরে আসেন। ফলে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ক্রিকেটাররা। এ ঘটনায় বাংলাদেশের চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অস্ট্রেলীয় নাগরিক ২৮ বছর বয়সী ব্রেনটন টেরেন্ট নামে স্বঘোষিত এক শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী হামলার দৃশ্য সরাসরি ফেসবুকে সম্প্রচার করে। ওই ভিডিওতে তাকে নিজের বন্দুক দিয়ে নির্বিচারে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। ঘটনার পরই তাকেসহ চারজনকে আটকের কথা জানায় দেশটির পুলিশ।